ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬০৫

ঢাকায় করোনাভাইরাসে মৃতদের দাফন হবে খিলগাঁও-তালতলায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৪৫ ১৯ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে রাজধানীতে কেউ মারা গেলে খিলগাঁও-তালতলা কবরস্থানে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।

বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) স্বাস্থ্য বিভাগের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে উত্তরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোমিনুর রহমান মামুন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ঢাকাতে কেউ করোনাভাইরাসে মারা গেলে তাদের তালতলা কবরস্থানের একটি অংশে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় দাফন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ঢাকার দুই সিটির দুজন সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা তালতলা কবরস্থান পরিদর্শন করে জানাবেন ঠিক কোন স্থানে দাফন করা যাবে।

বিশ্বে মহামারীর রূপ পাওয়া নভেল করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে প্রথম একজনের মৃত্যু হয় বুধবার। বিদেশফেরত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন সত্তর বছরের ওই বৃদ্ধ। আইইডিসিআর’র তথ্য মতে, ওই ব্যক্তির আগে থেকেই সিওপিডি (ফুসফুসের ক্রনিক রোগ), ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি জটিলতা ছিল। এছাড়া হৃদযন্ত্রে একবার স্টেন্টিংও হয়েছিল।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফার সভাপতিত্বে সভায় বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।

এছাড়াও ডিএনসিসির কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে জনসমাগম যাতে না হয়, এজন্য আপাতত উৎসব-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

সভায় সরকারের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় একটি কমিটি গঠন করে ডিএনসিসি।

এ কমিটি দেশে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রয়োজনে কোয়ারেন্টিনসহ আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং যে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ জাতীয় কমিটির পরামর্শ নেবে।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামকে সভাপতি এবং প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মমিনুর রহমান মামুনকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা, জনসংযোগ কর্মকর্তা, ডিএনসিসি এলাকার সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ঢাকা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, ঢাকা সিভিল সার্জন, ডিএনসিসি এলাকার সব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগীয় উপপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা পরিচালক, ঢাকা বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিনিধি।

ডিএনসিসির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এমদাদুল হক এ কমিটির ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবেন।

কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে ঢাকার উত্তরে ভ্রাম্যমাণ আদালত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোসলিনা পারভীন ও জিনিয়া জিন্নাতের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার বিকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।

করোনাভাইরাস গণসংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো কোয়ারেন্টিন কার্যক্রমের তালিকা অনুযায়ী গুলশান এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান চলে।

ডিএনসিসি বলছে, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাসায় গিয়ে তাদের অবস্থান নিশ্চিতের পাশাপাশি আবাসিক হোটেলগুলোতে প্রবাসী যাত্রী ও কোয়ারেন্টিনের বিষয়েও মনিটর করা হয়।

গুলশান এলাকার হোটেল ওয়েস্টিন, হোটেল ফোর সিজন, হোটেল লং বিচ, হোটেল আমারি ও হোটেল লেইক শোরে নভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এসব প্রতিষ্ঠানে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করে দেখে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পাশাপাশি হোম কোয়ারেন্টিনের তালিকায় থাকা কোনো ব্যক্তি এসব হোটেলে অবস্থান করছেন কি না তা যাচাই করে দেখা হয়।