ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৯৭

পানিবন্দি লাখো মানুষ, ১০ জনের মৃত্যু

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২৮ ১৬ জুলাই ২০১৯  

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বাড়ছে পানিবন্দি ও বন্যার পানিতে ডুবে নিহতের সংখ্যাও। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ শিশুসহ ৫ জন এবং বন্যার পানিতে ডুবে ৩ শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কুড়িগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তার পানি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৯ উপজেলার ৫৬ ইউনিয়নের ৪০৭টি গ্রাম। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেয়ায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষজন।

চরাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী উঁচু বাঁধ এবং পাকা সড়কসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের কথা বলা হলেও বন্যা দুর্গত বেশিরভাগ মানুষ ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

মো: হাফিজুর রহমান জানান, জেলার ৯ উপজেলায় বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে ১ হাজার মেট্রিক টন চাল, ২০ লাখ টাকা ও ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ৮৫টি মেডিকেল টিম বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য কাজ করছে।

অন্যদিকে কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ি উপজেলাসহ সোনাহাট স্থল বন্দরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পানির প্রবল তোড়ে রৌমারী উপজেলার চাক্তাবাড়ি এলাকায় প্রায় শহর রক্ষাবাঁধের প্রায় দেড়শ ফুট ধসে যাওয়ায় যাদুর চর ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী ৩০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

বন্যার কারণে ৩৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪৫টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে ৯ হাজার ৯শ ৪২ হেক্টর জমির সবজি বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।