ঢাকা, ২৭ আগস্ট বুধবার, ২০২৫ || ১১ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৮৫৫

ভিশন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিপিবি’র ইশতেহার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:২২ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮  

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

 

ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা হবে। সংবিধান, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-(সিপিবি)।  

 

‘ভিশন মুক্তিযুদ্ধ-৭১’ শিরোনামে সিপিবির নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো ৩০টি দফা ও ১৫১টি উপ-দফায় বর্ণনা করেছে দলটি।

রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনে গত ১ ডিসেম্বর সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী শ্রমিক-কৃষক-মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত জনগণ যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলেন তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। সেই স্বপ্ন হল ‘ভিশন মুক্তিযুদ্ধ-৭১’।” আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। 

সেলিম বলেন, “আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাদের অক্ষমতার প্রমাণ দিয়েই চলেছে। এমনকি এই দুটি দলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক কাঠামো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বরং যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা ক্রমান্বয়ে আরও কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার প্রবণতা  দেখিয়েছেন।”

 

জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হলে বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং দ্বি-দলীয় রাজনীতির বৃত্ত ছিন্ন করে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি গড়ে তোলা অপরিহার্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেলিম।

 

৩০ দফা ইশতেহারে যা আছে

* ক্ষমতায় গেলে সিপিবি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সংবিধান, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার করবে। গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে।

* ভোটে জিতলে নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার করে চালু করা হবে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা।

* বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ‘ মৌলিক অধিকার সহ সব কালা কানুন’ বাতিল করা হবে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা  মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

* কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস করা, ঘুষ-দুর্নীতি-লুটেপাটের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হবে বাম এ দলটির লক্ষ্য।

* সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ রুখতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা সহ ‘মাফিয়া-গডফাদারদের’ দমন এবং অপরাধী চক্রের দেশি-বিদেশি অর্থ ও শক্তির উৎসগুলোর মূল উৎপাটন করা এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-দুর্বৃত্তায়ন ও মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করে সিপিবির।

* টেলিকম খাতে শৃঙ্খলা আনতে অভিন্ন কলরেট চালু, ইন্টারনেট মূল্য নির্ধারণ, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধ করার পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়াইফাই জোন তৈরি করা, ‘ই-গভারনেন্স’ চালু করা, সাইবার ক্রাইম বন্ধ করা, ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্ত নিশ্চিত করাসহ তথ্য-প্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সার্বজনীন করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ইশতেহারে।

* জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সুন্দরবন এলাকায় শিল্প-কারখানা নির্মাণ বন্ধ করা। মৃতপ্রায় নদ-নদী পুনরুজ্জীবিত করা, ‘পরিবেশ আদালতের’ মাধ্যমে পরিবেশ বিনষ্টকারীদের বিচারের আওতায় আনবে সিপিবি।

* প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ‘ঝুলে থাকা’ সমস্যার সমাধান করা হবে।

* পাকিস্তানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়, আটকে পড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের ফেরত পাঠানো, ভারত থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, সীমান্তে হত্যা বন্ধ ও বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করা, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিয়ে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি থাকছে সিপিবি'র।

 

আরও পড়ুনঃ  উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন করে দেব—জাতির কাছে শেখ হাসিনার ওয়াদা

 

ইশতেহার শেষে সিপিবি সভাপতি সেলিম বলেন, “লুটপাটের ‘ব্যবস্থা বদল’ করে বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করতে সিপিবি বদ্ধপরিকর।”

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘কাস্তে’ মার্কায় সিপিবির মনোনিত প্রার্থীদের এবং বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্য প্রার্থীদের ‘মই’ ও ‘কোদাল’ মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এসময় সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন ও অনিরুদ্ধ দাস অঞ্জন, কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ভোটের সব খবর বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর