ঢাকা, ২০ আগস্ট বুধবার, ২০২৫ || ৫ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
১৬৩

কম খরচে বাংলাদেশ থেকে নেপালে যাওয়ার উপায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৪১ ১১ আগস্ট ২০২৫  

আপনি কি হিমালয় কন্যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেপাল ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন? তাহলে জেনে নিন, বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে যাওয়ার সহজ ও সুবিধাজনক উপায়গুলো। চলুন, একনজরে দেখে নেয়া যাক-

 

১. বিমান

বাংলাদেশ থেকে নেপালে যাওয়ার সবচেয়ে দ্রুত ও সুবিধাজনক উপায় হলো বিমান। ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে। ফ্লাইটে যেতে লাগবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। টিকিটের মূল্য পড়বে ৮,০০০–১৫,০০০ টাকা (একমুখী)।

 

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে ফ্লাইট বুকিং দেয়া যাবে। ফ্লাইট ভাড়াও তুলনামূলকভাবে কমানো যেতে পারে যদি আপনি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের অফার ও প্যাকেজ গ্রহণ করেন। কিছু ট্রাভেল এজেন্সি প্যাকেজ ট্যুর অফার করে। যেখানে বিমান ভাড়া, হোটেল এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।

 

২. বাস (সড়ক পথে):

অল্প খরচে নেপাল যেতে বিকল্প হতে পারে বাস। ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু অনেক কোম্পানি রেগুলার সার্ভিস দেয়। বাসে যেতে সময় লাগবে ২৫–৩০ ঘণ্টা। টিকিটের দাম ৩,০০০–৫,০০০ টাকা। শ্যামলি পরিবহন, গ্রিন লাইন পরিবহন ও সাদিক পরিবহন বাংলাদেশ টু নেপাল বাস পরিচালনা করে।

 

আড্রেস ও যোগাযোগ- শ্যামলি পরিবহন: মিরপুর ১০, ঢাকা। গ্রিন লাইন পরিবহন: আগারগাঁও, ঢাকা। শ্যামলী ট্রাভেলসের বাস ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা, ফুলবাড়ি, শিলিগুড়ি পার হয়ে ভারতের কাকরভিটা সীমান্ত দিয়ে সরাসরি নেপালের কাঠমন্ডু যায়।

 

৩. ট্রেন:

বাংলাদেশ থেকে নেপাল যাওয়ার সরাসরি ট্রেন সার্ভিস নেই। তবে আপনি কলকাতা থেকে ট্রেন ধরতে পারেন। সেখান থেকে বাসে দেশটিতে যেতে পারেন। কিন্তু এটি সময়সাপেক্ষ। তবে এর খরচ কম। প্রসঙ্গত, নেপাল যাওয়ার জন্য ফ্লাইট হলো সবচেয়ে সুবিধাজনক ও দ্রুত উপায়। তবে যারা বেশি সময় নিয়ে যাত্রা করতে চান, তারা বাস বেছে নিতে পারেন। 

 

বাংলাদেশিদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয় হলো নেপালে যেতে প্রয়োজেন নেই ভিসার। সেই সঙ্গে বাসে চড়েও সড়কপথে কম খরচে দেশটি ঘুরে আসা সম্ভব। শুধু প্রয়োজন ভারতের টানজিট ভিসা। এক্ষেত্রে ভ্রমণের আগে পাসপোর্ট ও ভিসা নিশ্চিত করতে হবে। বিমান বা বাসের টিকিট আগে থেকেই বুক করে রাখতে হবে। মোবাইল ফোনে ফুল চার্জ দিয়ে রাখতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখতে হবে।

 

দর্শনীয় স্থান

নেপালের মূল আকর্ষণ কাঠমান্ডু, নাগরকোট, পোখারা। কাঠমান্ডু নেপালের রাজধানী, একই সঙ্গে নেপাল ভ্রমণের গেটওয়ে। কাঠমান্ডুতে দেখতে পারবেন বসন্তপুর দরবার স্কয়ার, শম্ভুনাথ মন্দির, পাঠান দরবার স্কয়ার, ভক্তপুর দরবার স্কয়ার, বুদ্ধনাথ মন্দির ইত্যাদি। কাঠমান্ডু শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে নাগরকোট। নেপালের যেসব স্থান থেকে সবচেয়ে মনোরম সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়, নাগরকোট তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা। হিমালয়ের মোট ১৩টি পর্বত রেঞ্জের মধ্যে ৮টিই নাগরকোট থেকে দেখা যায়।

 

পোখারা নেপালের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে। পোখারায় দেখবেন ডেভিড ফলস, গুপ্তেশ্বর গুহা ও শ্বেতী নদী। এ নদীর পানির রং সাদা। বিখ্যাত ফেওয়া লেকে করতে পারেন নৌ-ভ্রমণ। আর সূর্যোদয় দেখতে খুব সকালে যেতে হবে সরংকোট।

 

খরচ

কাঠমান্ডুতে দর্শনীয় স্থানগুলো মোটামুটি কাছাকাছি হওয়ায় তেমন খরচ নেই বললেই চল। এ ছাড়া সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য মন্দিরগুলোর টিকেট বিদেশিদের থেকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম দামে পাওয়া যায়। খাবারের থালি নেপালে ২১০-৪২০ রুপির মধ্যে পাওয়া যায়। তাই থাকা-খাওয়া ও বেড়ানোর খরচ মিলিয়ে কমের মধ্যে হয়ে যাবে। জনপ্রতি ৪০-৫০ হাজার টাকার মধ্যে খুব ভালোভাবে এসব দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারেন।

 

যেখানে থাকবেন?

থাকতে হলে থামেলের চেয়ে উপযুক্ত স্থান আর দ্বিতীয়টি নেই। কারণ পুরো থামেলের গলি ঘুপচিতে অসংখ্য হোটেল/ ব্যাকপ্যাকার হোস্টেল রয়েছে। ১৪০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে ভালো ডাবল রুমের বাজেট হোটেল এখানে পাওয়া সম্ভব। ৫৬০ টাকায় সিঙ্গেল রুমের হোটেলও এখানে আছে। বাজেট আরেকটু বেশি যেমন- ৪২০০ টাকা বা তার বেশি হলে ডিলাক্স রুমের খাবারসহ অনেক ভালো হোটেল পাওয়া যায়। তবে থামেলের হোটেলগুলো আগে থেকে বুকিং না দিয়ে বরং কয়েকটি হোটেল ঘুরে যাচাই-বাছাই করলে সস্তায় ভালো হোটেল পাওয়া সম্ভব।

 

খাবেন কোথায়?

নেপালের লোকাল খাবার হিসেবে তারা ভাতের থালিকেই প্রাধান্য দেয়। তাই কাঠমান্ডুর যেখানেই যাওয়া হোক না কেন ভাত না খেয়ে থাকা অসম্ভব। ভাতের সঙ্গে ডাল, মাছ, মুরগি, সালাদ, রায়তা, শাক ও পাঁপড় থালিতে থাকে। নেপাল শীতপ্রধান দেশ বলে সেখানে মোমোর প্রচলন আছে। থামেল ও কাঠমান্ডুর অন্যান্য জায়গায় অসংখ্য মোমোর দোকান আছে। এ ছাড়াও আছে নানা স্বাদের নানা রংয়ের চা ও কফি। ফুলের পাপড়ি থেকেও চা তৈরি করেন তারা।

ভ্রমণ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর