ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৪৪৩

করোনাক্রান্ত হলে স্বাদ, গন্ধ পাওয়া যায় না কেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:০৪ ১৯ নভেম্বর ২০২০  

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে রোগির ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এ থেকে মুক্ত হওয়ার পরও সহসা তা ফিরে আসে না। কারণ প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শ্বসনতন্ত্রের উপর দিক সংক্রমিত করে। অন্য ভাইরাসগুলোও একই কাজ করে।

 

গরিব দেশগুলোতে টিকাকরণের জন্য কাজ করছে বিল গেটসের সংস্থা ‘দ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন্স অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি)’। সেটির একটি ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কোভিড ১৯-এর মতো অন্য ভাইরাসগুলোর সংক্রমণেও কেন ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদক্ষমতা নষ্ট হয়, সেটার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তারা।

 

সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ রাইনোলজিক্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ক্লেয়ার হপকিন্স এবং ইউকে ইএনটির প্রেসিডেন্ট নির্মল কুমার বলেন, ভাইরাসগুলো থেকে জ্বর-সর্দি হয়। পরে রোগী সংক্রমণ মুক্ত হলেও তাদের নানাভাবে ভুগতে হয়। এগুলোকে বলা হয় ‘পোস্ট-ইনফেকশাস লসেস’।

 

তিনি বলেন, ২০০-এরও বেশি ভাইরাস আছে যারা শ্বসনতন্ত্রের উপর দিকটার ক্ষতি করে। তাই করোনা রোগীরা ঘ্রাণশক্তি বা স্বাদক্ষমতা হারাচ্ছেন। এটি আর কিছু নয়।

 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নাকের নাসারন্ধ্র্রের ভেতর ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখে বিশেষ ধরনের কতিপয় কোষ। কোভিড-১৯ সেসব কোষকে সংক্রমিত করছে। স্বভাবতই সংক্রমণ রুখতে ব্যস্ত হয়ে উঠছে কোষগুলো। ফলে ঘ্রাণশক্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে পারছে না তারা। স্নায়ুগুলোকে জরুরি বার্তা পাঠাতে পারে না সেই কোষগুলো। যে কারণে করোনা রোগীরা প্রাথমিকভাবে ঘ্রাণ-স্বাদশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। অন্য ভাইরাসের সংক্রমণেও এটা হয়।

 

সংক্রমণ শুরু হওয়ার ৫ মাস পর দেখা গিয়েছিল, শরীরে খুব বেশি তাপমাত্রা বা জ্বর, লাগাতার সর্দি, হাঁচি, কাশির মতোই কোভিড রোগীরা প্রাথমিক পর্বে ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম ‘অ্যানোস্মিয়া’। করোনা রোগীদের স্বাদক্ষমতাও হারাতে দেখা গেছে। কেউ কেউ মিষ্টিকে লবণাক্ত বলে মনে করছেন। কখনও মিষ্টিজাতীয় জিনিস তাদের টক লাগছে।

 

ওই সময় ব্রিটেনের একটি মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র জানায়, করোনা রোগীদের অর্ধেকই প্রাথমিক পর্বে ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। আর ১৬ শতাংশ রোগী সংক্রমণ মুক্ত হওয়ার পরও তা  ফিরে পাননি। পরে বিভিন্ন গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, কোভিড সংক্রমণের পর ‘ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদক্ষমতা হারানো খুব স্বাভাবিক। প্রতি ১০ জন রোগীর মধ্যে একজনের চেয়েও বেশি ক্ষেত্রে এই দু’টি লক্ষণ দেখা গেছে।

 

পরে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, করোনা রোগীরা শুধু ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলছেন তা-ই নয়; তারা কোনও একটি গন্ধের সঙ্গে অন্য ধরনের গন্ধকে গুলিয়ে ফেলছেন। কফির গন্ধও কারও কটূ লাগছে। কেউ আঁশটে গন্ধ পাচ্ছেন। কারও পচা মাছের গন্ধ নাকে আসছে। কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনার সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়তে দেখা যায়।

 

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এও জানাচ্ছেন, ঘ্রাণশক্তি হারাতে পারে নানা ধরনের স্নায়ুরোগেও। তাই ঘ্রাণশক্তি হারানো করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর অন্যতম, সেই কথা জোর দিয়ে বলা উচিত নয়।