ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ২৬ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৫৩৮

প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পিএসজি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:০৭ ১৯ আগস্ট ২০২০  

একপেশে সেমিফাইনালে লিপজিগকে ৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে পিএসজি। লিসবনে দর্শকশুন্য ম্যাচে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করেছেন মারকুইনহোস, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও হুয়ান বার্নাট।

প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল পিএসজি। দুই গোলেরই যোগানদাতা ছিলেন নেইমার। এস্তাদিও দ্য লুজে আরো একবার নিজেকে সামনে থেকে প্রমাণ করেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। গত সপ্তাহে আটালান্টার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে যেভাবে পিএসজির জয়ে সহায়তা করেছিলেন, গতকালও সেটার ব্যতিক্রম ছিল না। 

৫৫ মিনিটে বার্নাটের গোলে পিএসজির জয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে লিপজিগের স্বপ্নভঙ্গ হয়। পুরো ম্যাচে জার্মানির দলটি কোনোভাবেই বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়কে রুখতে পারেননি। নেইমার ছাড়াও পিএসজির প্রায় সব খেলোয়াড়রাই ছিল অপ্রতিরোধ্য। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে অতীত ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করার পথে যোগ্য দল হিসেবেই টিকে রয়েছে ফ্রান্সের দলটি।

২০১৭ সালে বার্সেলোনার কাছে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা এখনো মনে রেখেছেন ফরাসি সমর্থকরা। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয়ান আসরের অভিজ্ঞতাও খুব একটা মধুর নয়। গত বছর শেষ ১৬’র লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল। কাতারি মালিকানাধীন ক্লাবটির জন্য মালিকপক্ষ এতদিন যা করে এসেছে, সেই আস্থার প্রতিদানই যেন শেষ পর্যন্ত পেল।

২০০৪ সালে শুরু হওয়া ইউরোপের এলিট ক্লাব প্রতিযোগিতায় মোনাকোর পর প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠল থমাস টুখেলের দল। ৯ বছর আগে লিগ ওয়ানের মধ্য সারির একটি টিম ছিল তারা। সেসময় মালিকানা নেয়ার পর কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টের অধীনে গত কয়েক বছরে এক নম্বর ফ্রেঞ্চ দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় থেকে এখন মাত্র এক ম্যাচ দূরে রয়েছে দলটি। যে শিরোপাটি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বের যেকোনো ক্লাবের জন্য স্বপ্ন।

করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ফুটবলের ২০১৯-২০ মৌসুম শেষ করার লক্ষ্যে লিসবনে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে সব ম্যাচ সিঙ্গেল লেগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। যে কারণে বদলে যাওয়া ফর্মেটে প্রতিটি দলকেই বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। কোনো ধরনের ভুলের সুযোগ এখানে নেই। অধিকন্তু সমর্থকদের অভাব তো রয়েছেই। সব ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে যারা জয় করতে পারবে তারাই সামনে এগিয়ে যাবে। পুরো ৯০ মিনিট লড়াই করার মানসিকতা নিয়েই এ ধরনের ম্যাচে মাঠে নামতে হবে।

কিন্তু কালকের ম্যাচটিতে কোনো দিক থেকেই পিএজির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি লিপজিগ। জুলিয়ান নাগেলসম্যানের তরুণ্য নির্ভর দলটি এ প্রথমবারের মতো কোনো ইউরোপীয়ান আসরের সেমিফাইনালে পা রেখেছিল। মূল দলের সাতজন খেলোয়াড়ই ছিলেন ২১ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। ফাইনাল এইট শুরু হওয়ার আগে দলের মূল তারকা টিমো ওয়ার্নারকে চেলসির কাছে বিক্রি করার খেসারতই যেন দিতে হলো তাদের।

১৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার আগে নেইমারের শট পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয়েছিল পিএসজিকে। বক্সের ঠিক বাইরে নেইমার ফ্রি-কিক আদায় করে নেন। ডি মারিয়ার নেয়া ফ্রি-কিকে মারকুইনহোস দলকে এগিয়ে দেন। টুখেলের দলে মূলত মিডফিল্ডার হিসেবেই খেলে থাকেন এ ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। ম্যাচে তিনি খুব একটা গোল পান না। কিন্তু আটালান্টার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের গোলে পিএসজির হয়ে সমতা ফিরিয়েছিলেন। 

নিষেধাজ্ঞার কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা হয়নি ডি মারিয়ার। হাঁটুর ইনজুরি কাটিয়ে মূল একাদশে আরো ফিরেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তিন জনের আক্রমনভাগে এমবাপ্পে,নেইমার ও মাউরো ইকার্দির সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মারিয়া। অন্যদিকে ইনজুরি আক্রান্ত গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের পরিবর্তে খেলতে নামা সার্জিও রিকোকে খুব কমই পরীক্ষা দিতে হয়েছে। 

ফ্রি-কিক থেকে নেইমার প্রায় গোল করেই বসেছিলেন। কিন্তু আবারো তার শটটি পোস্টে লেগে ফেরত আসে। বিরতির আগে লিপজিগের গোলরক্ষক পিটার গুলাসি পিএসজিকে দ্বিতীয় গোল উপহার দেন। তার বাজে একটি পাস থেকে নেইমারের ফ্লিকে ডি মারিয়া ব্যবধান দ্বিগুন করেন।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে মূলত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। রাইট-ব্যাক পজিশনে নোর্দি মুকিয়েলের বিপক্ষে ফাউলের আবেদন করেছিল লিপজিগ। কিন্তু ডাচ রেফারি বিওর্ন কুইপার্স খেলা চালিয়ে যাওয়ার সংকেত দেন। এ সুযোগে ডি মারিয়ার ক্রসে বার্নাটের হেডে পিএসজির জয় নিশ্চিত হয়।

১৯৯৩ সালে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম শিরোপা জয় করেছিল মার্সেই। ২৭ বছর পর দ্বিতীয় ফরাসি দল হিসেবে এখন পিএসজির সামনে মর্যাদাকর এ ট্রফি জেতার সুযোগ এসেছে।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর