ঢাকা, ০৮ অক্টোবর বুধবার, ২০২৫ || ২২ আশ্বিন ১৪৩২
good-food

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে নীতিগত অবস্থান জানালেন তারেক রহমান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৩৮ ৭ অক্টোবর ২০২৫  

বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেবে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, “ওই দেশ বা অন্য দেশ বিষয় না। বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ আমার কাছে আমার স্বার্থ, আমি আগে আমার দেশের মানুষের স্বার্থ দেখব, আমার দেশের স্বার্থ দেখব। ওটাকে আমি রেখে আপহোল্ড করে আমি যা যা করতে পারব, আমি তাই করব।”

 

বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে যেই সম্পর্ক ছিল, সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিএনপির নীতি কী হবে— এমন প্রশ্নে একথা বলে তারেক রহমান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দেন। তার সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় অংশ মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়। এক দিন আগে প্রকাশ হয়েছিল প্রথম অংশ।

 

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমার যেটা ন্যায্য সেটা আমি চাই।অবশ্যই আমি আমার পানির হিস্যা চাই। অবশ্যই আমি দেখতে চাই না যে, আরেক ফেলানী ঝুলে আছে। অবশ্যই আমরা এটা মেনে নেব না।

 

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “এখন তারা যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, সেখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। এটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের সঙ্গে শীতল থাকবে। সো, আমাকে আমার দেশের মানুষের সঙ্গে থাকতে হবে।”

 

“অন্তর্বর্তী সরকার যত বেশি দৃঢ় থাকবে, ততই সন্দেহ চলে যাবে”

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন—এমন প্রশ্নে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বিষয়টি তো রাজনৈতিক। এটি তো কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়। আমরা প্রথম থেকে যে কথাটি বলেছি যে, আমরা চাই, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক। অর্থাৎ অনেক কিছুর মত বিভিন্ন বিষয় আছে- যেমন আমরা যদি মূল দুটো বিষয় বলি যে, কিছু সংস্কারের বিষয় আছে, একই সঙ্গে প্রত্যাশিত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বাধীন নির্বাচনের একটি বিষয় আছে।”

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক।

“মূলত কিছু সংস্কারসহ যেই সংস্কারগুলো না করলেই নয়, এরকম সংস্কারসহ একটি স্বাভাবিক সুষ্ঠু, স্বাধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাই হচ্ছে বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। আমরা প্রত্যাশা করি যে, উনারা উনাদের উপরে যেটা মূল দায়িত্ব, সেটি উনারা সঠিকভাবে সম্পাদন করবেন। এটাই তো উনাদের কাছে আমাদের চাওয়া রাজনৈতিক দল হিসেবে।”

 

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা রাখি, প্রত্যাশা করি যে, উনারা করবেন কাজটি সুন্দরভাবে। স্বাভাবিকভাবে এই কাজটির সৌন্দর্য্য বা কতটুকু ভালো, কতটুকু ভালো বা মন্দভাবে করতে পারছেন, তার ওপরেই মনে হয় সম্পর্কের উষ্ণতা বা শীতলতা যেটাই বলেন, সেটা নির্ভর করবে।”

 

সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আগে তাদের নিয়ে সন্দেহ ছিল জানিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ডক্টর ইউনুস উনি মোটামুটিভাবে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার উনি উনার যে সিদ্ধান্ত সেটির ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তারপর থেকেই খুব স্বাভাবিকভাবেই এই সন্দেহটি বহু মানুষের মন থেকে ধীরে ধীরে চলে যেতে ধরেছে।”

 

তিনি বলেন, “আমি মনে করি, উনারা যা বলেছেন উনারা যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় থাকবেন, উনাদের বক্তব্যে উনাদের কাজে যত বেশি দৃঢ় থাকবেন, ততই সন্দেহ চলে যাবে আস্তে আস্তে।”

 

লন্ডনে তার সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের বিষয়ে সরকারপ্রধানের প্রশংসা করে তারেক রহমান আরও বলেন, “এর বাইরে স্বাভাবিকভাবেই উনি অত্যন্ত একজন স্বনামধন্য মানুষ। অত্যন্ত বিজ্ঞ মানুষ উনি। এর বাইরে তো অবশ্যই স্বাভাবিকভাবে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে। এর বাইরেও উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন যে, জনগণ যদি আপনাদেরকে সুযোগ দেয়, তাহলে আপনারা কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য? এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

 

“আমার কিছু চিন্তাভাবনা দেশের মানুষকে নিয়ে, দেশের জনগণকে নিয়ে, দেশকে নিয়ে আমরা যদি সুযোগ পাই, জনগণ আমাদেরকে যদি সেই সুযোগ দেন, তাহলে আমরা কী কী বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে কিছু কিছু আলোচনা হয়েছে।”