ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, ২০২৫ || ২৭ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৬১৫

আমি যে লোকমানকে চিনি সে জীবনে মদ খায়নি, জুয়া খেলেনি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৩৯ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

হঠাৎ করেই পুরো ক্রীড়াঙ্গনে এখন বিতর্কের কালো থাবা। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি নাড়িয়ে দিয়েছে অনেকের গদি। ক্রীড়াঙ্গন দাপটের সঙ্গে ‘শাসন’ করে যাওয়া অনেকেই এখন মাঠ ছেড়ে পলাতক! একজন থানায় রিমান্ডে! অনেকের ব্যাংক হিসেবের খোঁজ নিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একজন হেভিওয়েটকে আবার দুদকও তলব করেছে।

ক্রীড়াঙ্গনের এই ধাক্কা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লেগেছে ক্রিকেট বোর্ডের গায়ে। বিসিবি’র পরিচালক ও ফ্যাসিলিটিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া এখন ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির জেরে পুলিশ ও ডিবির রিমান্ডে। বিসিবির আরেক পরিচালক মাহবুব আনামকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সন্দেহে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তলব করেছে।

দুই পরিচালকের এমন নাজুক পরিস্থিতিতে বিসিবির অবস্থান কি? এ প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান নিজের অবস্থান ব্যাখ্যায় বললেন - ‘আমাদের তো কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কিছু নেই। যদি অপরাধ প্রমাণিত হয় তখন অবশ্যই বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এখন এটা বেশি আর্লি টু সে এনিথিং। আমার কথা হচ্ছে যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তবে তার বিচার হবে। এখানে কোনো ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই। আমি বিসিবিতেও ছাড় দিব না। বিসিবিতেও কখনো আমি ছাড় দেইনি, এটি হতে পারে না।’

লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তার ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান পাপন একটু বিস্তারিতই জানালেন - ‘ লোকমানের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ এসেছে, যদি সেটা ঠিক হয়, তাহলে তার শাস্তি হবে। ওর যদি বিদেশে কোনো টাকা থাকে যেটা নিয়ম অনুযায়ী যায় নাই কিংবা অবৈধ সম্পদ থাকে তাহলে ও কেন, যে কারোর বিচার হবে। খালি একজন নিয়ে ইস্যু না। যার আছে তারই হবে। তবে এখনো যেহেতু এটা প্রক্রিয়াধীন, তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়নি, তাকে কোর্টেও পেশ করা হয়নি। রায় দেওয়া হয়নি। যখন এসব হবে তখন কমেন্ট করা যাবে। আমার মনে হয় এখন কমেন্ট করার জন্য উপযুক্ত সময় না। কিন্তু কেউ দোষ করলে তার অবশ্যই বিচার হবে।’

লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় বিসিবি সভাপতি অতি অবশ্যই চমকে গেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তার ‘বন্ধু’কে এমন সময় কাটাতে হবে - এমন কোনো ধারণাই ছিল না নাজমুল হাসান পাপনের। তাই বিস্ময় নিয়েই নাজমুল বলছিলেন - ‘আমি যে লোকমানকে চিনি সে জীবনে মদ খায়নি। সে জীবনে কোনোদিন জুয়া খেলেনি। এটা যেমন সত্যি, আবার এটাও সত্যি যে সে ক্যাসিনো ভাড়া দিয়েছে! এখানে অস্বীকার করার তো কোনো পথ নেই। সে যদি করে থাকে, তার বিচার হবে। আমরা তাকে যেভাবে চিনি সেটাই বললাম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে। দেশে আইন আছে। তারা আগে দেখুক, বুঝুক, আসলে কে কি করেছে? যে দোষ করেছে তার শাস্তি হবে, এটি নিয়ে আমাদের কোনো কিছু বলার নেই।’
গেল ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে তেজগাঁওয়ের মনিপুরী পাড়ার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, ক্যাসিনোর ভাড়া থেকে প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা করে পাচ্ছিলেন লোকমান। অস্ট্রেলিয়ার দুটি এবং দেশের কয়েকটি ব্যাংকে তার গচ্ছিত টাকার পরিমাণ প্রায় ৪১ কোটি টাকা।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা লোকমান এক সময় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে ২০০৮ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগেই লোকমান গেল দুই বছরে বিপুল অংকের টাকার মালিক হয়েছেন বলে তথ্য এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। 
 

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর