ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
২৮৩

তৃতীয় দিন শেষে চালকের আসনে আফগানিস্তান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৩৭ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে বিশাল টার্গেট দিতে যাচ্ছে আফগানিস্তান। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের ২০৫ রানে অলআউট করে ১৩৭ রানের লিড নেয় তারা। একে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেটে ২৩৭ রান করেছে আফগানরা। ফলে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৭৪ রানে এগিয়ে তারা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রান করেছিল আফগানরা।
দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগ মূর্হুতে আফগানিস্তানকে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেটে ১৯৪ রান করে টাইগাররা। ১৪৬ রানে অষ্টম উইকেট হারানোর পর শেষ বিকেলে নবম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রান তুলে দিন শেষ করেন মোসাদ্দেক হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। মোসাদ্দেক ৪৪ ও তাইজুল ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় দিন মোসাদ্দেক ও তাইজুল ইনিংস শুরু করেন। দলকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু দিনের তৃতীয় বলেই নবীর বলে ১৪ রানেই থেমে যান তাইজুল। পরে আরও ১১ রান যোগ করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের শেষ ব্যাটসম্যান নাইম হাসানকে ৭ রানে শিকার করে সাকিব বাহিনীকে ২০৫ রানে গুটিয়ে দেয় আফগানিস্তান। অন্য প্রান্তে ১ চার ও ২ ছক্কায় ৮২ বলে ৪৮ রান নিয়ে অপরাজিত থাকতে হয় মোসাদ্দেককে।

আফগান অধিনায়ক রশিদ নেন ৫৫ রানে ৫ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ বা ততোধিক উইকেট নিলেন তিনি। এছাড়া নবী ৫৬ রানে নেন ৩ উইকেট। তৃতীয় দিন সকালে মাত্র ১৭ মিনিট ব্যাট করে বাংলাদেশ। ফলে বড় লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারীরা। প্রথম ওভারেই আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে দু’টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ওপেনার এহসানউল্লাহ ৪ ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান রহমত শাহ শূন্য রান করে সাকিবের বলে আউট হন। এতে হ্যাটট্রিকের সুযোগ হয় বাংলাদেশ অধিনায়কের। কিন্তু সেটি রুখে দেন চার নম্বরে নামা হাসমতউল্লাহ শাহিদি।
সাকিবকে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি শাহিদি। ১২ রান করে অফস্পিনার নাইম হাসানের শিকার হন তিনি। ফলে ২৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এরপর জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ইব্রাহিম জাদরান ও আসগর আফগান। দু’জনে দেখেশুনে খেলতে থাকেন। মধ্যাহ্ন বিরতির আগ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট পতন হয়নি। দু’জনে অবিচ্ছিন্ন থাকেন। ৩ উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় আফগানিস্তান। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ১৯৩ রানে এগিয়ে ছিল তারা। এসময়  জাদরান ২৪ ও আসগর ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে আবারো নিজেদের লড়াই শুরু করেন জাদরান ও আসগর। এই জুটিকে তাড়াতাড়ি সাজঘরে ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠে বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু তাদের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকেন তারা। ফলে তাদের নৈপুণ্যে দলের স্কোর শতরানের কোটা পেরিয়ে যায়।
আফগানিস্তানের স্কোর তিন অংকে পৌঁছে দিয়ে নিজেদের সেরাটা দিতে থাকেন জাদরান-আসগর। ততক্ষণে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেয়া হয়ে যায় জাদরানের। এমন সময় বাংলাদেশকে দারুণ এক ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুল। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫০ রান করে ফিরেন প্রথম ইনিংসে ৯২ রান করা আসগর। চতুর্থ উইকেটে জাদরানের সঙ্গে ১০৮ রানের জুটি গড়েন তিনি।
আসগর ফিরলেও উইকেটরক্ষক আফসার জাজাইকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন জাদরান। সফলতার পথেই ছিলেন তারা। কিন্তু তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান নাইম। হাফসেঞ্চুরি তুলে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়া জাদরানকে ৮৭ রানে থামিয়ে দেন তিনি। ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ২০৮ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান জাদরান। জাজাই’র সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি গড়েন তিনি।
জাদরানের বিদায়ে উইকেটে আসেন এই টেস্ট দিয়ে বড় ফরম্যাটকে বিদায় বলার সিদ্বান্ত নেয়া মোহাম্মদ নবী। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউটের পর এবার ৮ রানে থামেন তিনি। এই ইনিংসে অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম শিকার ছিলেন তিনি।
দলীয় ১৮০ রানে নবীর বিদায়ে চিন্তায় ছিল না আফগানিস্তান। কারণ ততক্ষণে ৩১৭ রানের লিড হয়ে যায় আফগানদের। চতুর্থ ইনিংসে ৩’শ রানের বেশি টার্গেট স্পর্শ করাটা দূরুহই হবে বাংলাদেশের, পিচের পূর্বাভাস তেমনটিই বলছে।
তাই এই লিডকে আরও বড় করার জন্য বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন রশিদ। ৬ চারে নিজের ইনিংসের যাত্রা শুরু করেন তিনি। তাই প্রথম ইনিংসের মতো আবারো বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন দেখছিলেন কাবুলিওয়ালা অধিনায়ক। কিন্তু রশিদকে ২৪ রানেই থামিয়ে দেন তাইজুল। বোল্ড হওয়ার আগে ২২ বলে ২৪ রান করেন রশিদ। এই জুটির কাছ থেকে ৩০ রান পায় দল।
এরপর কাইস আহমেদকে নিয়েও ২৫ রানের জুটি গড়েন জাজাই। কাইসকে ১৪ রানে আউট করেন সাকিব। দিনের শেষ ভাগে তিনি ফিরলেও ইয়ামিন আহমাদজাইকে নিয়ে দিন শেষ করেন জাজাই। জাজাই ৩৪ ও আহমাদজাই শূন্য রানে অপরাজিত অছেন। বাংলাদেশের সাকিব ৩টি, তাইজুল-নাইম ২টি করে উইকেট নেন।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর