ঢাকা, ২৮ এপ্রিল রোববার, ২০২৪ || ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
২৭৫

হামুনে লন্ডভন্ড কক্সবাজার, উড়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:১৪ ২৫ অক্টোবর ২০২৩  

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে কক্সবাজার শহরের ঘরবাড়ি ও গাছপালাসহ বহু স্থাপনা। দেয়াল চাপা পড়ে দুই জনের নিহতের খবর পাওয়া গেলেও তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

 

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৭টার দিকে হামুন উপকূল অতিক্রম শুরু করার পর প্রাথমিক আঘাতে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক বাড়িঘর ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়।

 

সন্ধ্যার পর থেকে বাতাসের গতি ছিল অনেক বেশি। সেসময়ে অনেক ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। বড় বড় অনেক গাছও দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, ভেঙে উড়ে গেছে দোকানপাটও।

 

কক্সবাজার শহরের মতো মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ভেঙেছে গাছগাছালি। এতে অনেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ঝড়ের বড় প্রভাব পড়েনি।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ভোলার ওপর দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমের কথা ছিল ঘূর্ণিঝড় হামুনের। তবে গতিপথ পাল্টে ঝড়টি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার ওপর দিয়ে আগামী ১০ ঘণ্টার মধ্যে অতিক্রম করবে।

 

তিনি বলেন, হামুন গতিপথ পাল্টেছে। ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। বর্তমানে বাতাসের বেগ ৭০-৮০ কিলোমিটার। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে সাগর উত্তাল রয়েছে।

 

আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, কুতুবদিয়া দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের একটি অংশ অতিক্রম করেছে। এখন মূল অংশ উপকূল অতিক্রম করবে। এটি অতিক্রম করতে আরও ৮/১০ ঘণ্টা সময় লাগবে। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০৪ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং মোংলা ও পায়রাকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, ঘূর্ণিঝড় হামুনের দৈর্ঘ্য-প্রস্থসহ মোট ব্যাস প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। এটি উপকূলের ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় এর অগ্রভাগের প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশ এখন বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করছে। সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি সবচেয়ে বেশি থাকে এর কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্র ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতি এবং প্রচুর মেঘসহ উপকূলে এলে ঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে থাকে।

 

জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে থাকা সোহেল রানা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গাছ পড়ে অনেক সড়ক বন্ধ আছে।

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর ০১৮৭২৬১৫১৩২। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলার ৯ উপজেলায় ১৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি জানান, ৫ লাখ ৫ হাজার ৯৯০ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন জেলার ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও জেলায় ১১ লাখ ২৫ হাজার নগদ টাকা, ৬৪০ মেট্রিক টন চাল ও ৭০০ বান্ডিল ঢেউটিন মজুত আছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।