ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, ২০২৫ || ২৮ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৭৭৯

আফগানের বিপক্ষে জয় পাকিস্তানের

কঠিন সমীকরণে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৫৪ ২৯ জুন ২০১৯  

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পেল পাকিস্তান। এ নিয়ে টানা তৃতীয় জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে টেবিলের চার নম্বরে উঠে গেল সরফরাজরা। সেই সাথে সেমিফাইনালের পথটা কঠিন সমীকরণে পড়ে গেল বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার।

এই ম্যাচের পর রীতিমতো ঝড় বয়ে গেল পয়েন্ট টেবিলে। প্রথমবারের মতো শীর্ষ চারে উঠলো পাকিস্তান, নেমে গেল ইংল্যান্ড। বাংলাদেশও এক ধাপ নেমে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। এতোদিন যেকোনো এক ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার একটা ‍স্বপ্ন টিকে ছিলো। সেক্ষেত্রে দুই ম্যাচ হারতে হতো ইংল্যান্ডকে, তাহলে তারা থাকতো ৮ পয়েন্টে। বাংলাদেশ তার শেষ দুই প্রতিপক্ষ ভারত কিংবা পাকিস্তানের একজনকে হারিয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে চলে যেত সেমিফাইনালে।

পাকিস্তানের সঙ্গে রান রেটে মোকাবেলার সুযোগ ছিলো মাশরাফিদের। এখন ভারতের সঙ্গে হারলেও পাকিস্তানের সঙ্গে জিততেই হবে। কারণ পাকিস্তানের কাছে হারলে ১১ পয়েন্ট হয়ে যাবে দলটির। অন্যদিকে ইংল্যান্ডও এতোদিন আশা করতে পারতো এক ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের টিকিট পাওয়ার। বর্তমান হিসাব অনুযায়ী পাকিস্তান তাদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে জিতলে ইংল্যান্ডকে জিততে হবে দুই ম্যাচেই। এতোদিন কাগজেকলমে হুমকি ছিলো এবার সেটা সিরিয়াসলিই ভর করলো ইংল্যান্ডের উপর। তার উপর সামনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। একই আশঙ্কা নিয়ে আরো বিপদে শ্রীলঙ্কা। তাদের শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও সেমিফাইনালে যেতে সবগুলো ম্যাচ হারতে হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডকে।

 

শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার রান। সেট ব্যাটসম্যান ইমাদ ওয়াসিমের সঙ্গে ক্রিজে ওয়াহাব রিয়াজ।

বল হাতে আসেন অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব নিজেই।

ওভারের প্রথম দুই বলে সিঙ্গেল। তৃতীয় বলেই সহজ রান আউটের সুযোগ মিস, সঙ্গে ওভার থ্রোতে আরো এক রান। পরের বলেই মেরে উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন ইমাদ ওয়াসিম।

 

 লক্ষ্যটা বড় ছিল না। তারপরেও মুজিব-রশিদ-নবীদের সামনে বার বার ঝুঁকতে হয়েছে পাকিস্তানি ব্যাটারদের।

ইনিংসের প্রথম বলেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওপেনার ফখর জামানকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মুজিব-উর রহমান। চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ইমাম-উল হক এবং বাবর আজম। ৩৬ রানে ইমাম ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিদায় নেন ৪৫ করা বাবর। হারিস সোহেলের সঙ্গে মোহাম্মদ হাফিজের জুটিটা গড়তে গড়তেই ভেঙে যায়।

মুজিব-রশিদদের বিরুদ্ধে রান তুলতে খাবি খাওয়া হাফিজ ফেরেন ১৯ রানে। অধিনায়ক সরফরাজ এদিনও ব্যর্থ। ১৮ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ১৫৬ রানে ব্যাটসম্যান খুইয়ে হারের শঙ্কায় থাকা দলের হাল ধরেন ইমাদ ওয়াসিম। শাদাব খান তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিলেও দলকে বিপদে রেখেই ফিরে যান। তবে শেষ দিকে ওয়াহাব রিয়াজের ব্যাটে তৈরি হওয়া সম্ভাবনাকে সত্যি বানান ইমাদ ওয়াসিম।

এর আগে বিশ্বকাপের ৩৬তম ম্যাচে পাকিস্তানকে বড় লক্ষ্য দিতে ব্যর্থ হয় আফগানিস্তান।

শাহীন শাহ আফ্রিদির বোলিং তোপের পর নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে উইকেটে বিনিময়ে ২২৭ রান তুলতে সক্ষম হয় আফগানরা।

হেডিংলিতে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। যদিও দুই ওপেনার রহমত শাহ গুলবাদিন নাইব দ্রুতই রান তুলছিলেন। ভালো শুরু করেও দলীয় ২৭ রানে জোড়া আঘাত  হানে পাকিস্তান। টানা বলে আফগান অধিনায়ক নাইব হাসমতউল্লাহ শহিদিকে ফিরিয়ে দেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

তৃতীয় উইকেটে ইকরাম আলি খিলকে সাথে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন রহমত। দলীয় ৫৭ রানে ৪৩ বলে ৩৫ রান করে ফিরে যান রহমত। তার বিদায়ের পর ধৈর্যশীল ব্যাটিং করতে থাকা ইকরামের সাথে ক্রিজে যোগ দেন আসগর আফগান।

ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করা আসগর ভয়ংকর ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে ৩৫ বলে ৪২ রান করে শাদাব খানের লেগ স্পিনের পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার ইনিংসটি সাজান ছিল ৩টি চার ২টি ছয়ে।

আসগরের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি ইকরামও। ৬৬ বলে ২৪ রানের অতি ধীরগতির ইনিংস খেলে আউট হন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তাদের জুটিতে আসে ৬৪ রান। ১২৫ রানেই উইকেট তুলে নিয়ে আফগানদের কোণঠাসা করে দেয় পাকিস্তানিরা।

   

আবারো জোড়া আঘাতের পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ নবী নাজিবুল্লাহ জাদরান। তবে সে যাত্রায় সফল হননি নবী। ৩৩ বলে ১৬ রান করে ফিরে যান তিনি। কিন্তু নাজিবুল্লাহের ব্যাট ঠিকই চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আফগানিস্তান উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে.২২৭ রান।

পাকিস্তানের হয়ে ৪টি উইকেট শিকার করেছেন শাহিন শাহ। ২টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন ইমাদ ওয়াহাব।

স্কোর :

আফগানিস্তান - ২২৭/ (৫০)

রহমত শাহ ৩৫ (৪৩)

গুলবাদিন নাইব ১২ (১২)

হাসমতুল্লাহ শহিদী ()

ইকরাম আলি খিল ২৪ (৬৬)

আসগর আফগান ৪২ (৩৫)

মোহাম্মদ নবী ১৬ (৩৩)

নজিবুল্লাহ জাদরান ৪২ (৫৪)

সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ১৯* (৩২)

রশিদ খান (১২)

হামিদ হাসান ()

মুজিব উর রহমান * ()

বোলার

ইমাদ ওয়াসিম ১০--৪৮-

মোহাম্মদ আমির ১০--৪১-

শাহীন আফ্রিদি ১০--৪৭-

মোহাম্মদ হাফিজ --১০-

ওয়াহাব রিয়াজ --২৯-

শাদাব খান ১০--৪৪-

টার্গেট - ২২৮

পাকিস্তান - ২৩০/ (৪৯.)

ফখর জামান ()

ইমাম-উল হক ৩৬ (৫১)

বাবর আজম ৪৫ (৫১)

মোহাম্মদ হাফিজ ১৯ (৩৫)

হারিস সোহেল ২৭ (৫৭)

সরফরাজ আহমেদ ১৮ (২২)

ইমাদ ওয়াসিম ৪৯* (৫৪)

শাদাব খান ১১ (১৭)

ওয়াহাব রিয়াজ ১৫* ()

বোলার

মুজিব উর-রহমান ১০--৩৪-

হামিদ হাসান --১৩-

গুলবাদিন নাইব --৬৫-

মোহাম্মদ নবী ১০--২৩-

রশিদ খান ১০--৫০-

সামিউল্লাহ সেনওয়ারি --৩২-

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর