ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১১৯

দিনের হাসি শেষ বিকেলে ম্লান করে দিল টপঅর্ডার ব্যাটাররা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৫৭ ২৮ নভেম্বর ২০২১  

বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিং নৈপুন্যে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের বিপক্ষে লিড নিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের  ৩৩০ রানের জবাবে তাইজুলের ৭ উইকেট শিকারে প্রথম ইনিংসে পাাকিস্তানকে ২৮৬ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। ৪৪ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।

 

কিন্তু তাইজুলের সাফল্যের দিনটি হতাশায় শেষ করলো বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটাররা। ২৫ রানের মধ্যে বাংলাদেশের চার ব্যাটার প্যাভিলিয়নে ফিরেন। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ৩৯ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৮৩ রানে এগিয়ে টাইগাররা। 

 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের ম্যাচে দ্বিতীয় দিন ৩৩০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর দিন শেষে বিনা উইকেটে ১৪৫ রান করেছিলো পাকিস্তান। দুই ওপেনার আবিদ আলি ৯৩ ও আব্দুল্লাহ শফিক ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন। 

 

তৃতীয় দিনের প্রথম ওভারেই পাকিস্তান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন স্পিনার তাইজুল। আব্দুল্লাহ শফিককে ৫২ রানেই লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। শফিকের আউটে ক্রিজে গিয়ে স্ট্রাইকে যান আজহার আলি। মুখোমুখি হওয়া নিজের প্রথম বলেই তাইজুলের বলে লেগ বিফোর হন আজহার। তাই খালি হাতে ফিরতে হয় তাকে। 

 

দিনের শুরুতেই দুই ব্যাটারকে হারানোর ধাক্কার মাঝেও টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করেন আবিদ। সেঞ্চুরির পর অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে বড় জুটির পরিকল্পনায় ছিলেন আবিদ। উইকেটে জমে যাবার আগেই দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ১০ রান করা বাবরকে বোল্ড করেন আরেক স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। 

 

অন্যপ্রান্তে উইকেট শিকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন তাইজুল। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আরও একবার উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন তাইজুল। উইকেটরক্ষক লিটনের সহায়তায় ফাওয়াদ আলমকে ৮ রানেই থামিয়ে দেন তাইজুল। ফলে ৪ উইকেটে ২০৩ রান তুলে প্রথম সেশন শেষ করে পাকিস্তান। 

 

মধ্যাহ্ন-বিরতির পর তৃতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে পঞ্চম উইকেট শিকারের আনন্দে মাতান পেসার এবাদত হোসেন। পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ৫ রানে  লেগ বিফোর আউট করেন এবাদত। 
সতীর্থরা যাওয়া আসার মধ্যে থাকলেও, অন্যপ্রান্তে উইকেট আকড়ে ছিলেন আবিদ। আবিদের উইকেটের অপেক্ষায় ছিলো বাংলাদেশও। টাইগারদের সেই আশা পূরণ করেন তাইজুল। তারকা এ স্পিনারের  শেকার হওয়ার আগে  ২৮২ বলে ১২টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৩৩ রান করেন আবিদ। 

 

দলীয় ২১৭ রানে আবিদকে তুলে নিয়ে লিডের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। স্বীকৃত ছয় ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশের বোলাররা। তাই এ অবস্থায় দ্রুত পাকিস্তানের টেল-এন্ডারদের ছেটে ফেলার কাজ শুরু করেন তাইজুল-মিরাজ-এবাদতরা।

 

দলীয় ২২৯ রানে হাসান আলিকে শিকার করে ৩৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে নবমবারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করেন  তাইজুল। ৮ বলে ১২ রান করেন হাসান।  এরপর পাকিস্তানের দুই লোয়ার-অর্ডার ব্যাটার সাজিদকে এবাদত ও নোমানকে বিদায় দেন তাইজুল। সাজিদ ৫ ও নোমান ৮ রানে আউট হন। ফলে ২৫৭ রানে পাাকিস্তানের নবম উইকেটের পতন ঘটে। এমন অবস্থায়  ভালো একটি লিডের পথেই ছিলো বাংলাদেশ। 

 

কিন্তু শেষ উইকেটে বাংলাদেশের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ফাহিম আশরাফ ও শেষ ব্যাটার আফ্রিদি। ২৯ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি ভাঙ্গেন তাইজুল। ৩৮ রান করা ফাহিমকে তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে গুটিয়ে দেন তাইজুল। 

 

ইনিংসে ৪৪ দশমিক ৪ ওভার বল করে ১১৬ রানে ৭ উইকেট নেন তাইজুল। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।  তাইজুল ছাড়াও এবাদত ২টি ও মিরাজ ১টি উইকেট নেন।  প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানের লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নেমে পাকিস্তানের পেসার আফ্রিদির বোলিং তোপে পড়ে বাংলাদেশ। ২৫ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন চার ব্যাটার। সাদমান ইসলাম ১, সাইফ হাসান ১৮ ও নাজমুল হোসেন শান্ত শুন্য রানে আফ্রিদির শিকার হন। 

 

রানের খাতা খোলার আগেই পাকিস্তানের পেসার হাসানের শিকার হন অধিনায়ক মোমিনুল হক। অধিনায়কের বিদায়ের পর দিনের শেষ দিকে, আর কোন বিপদ ঘটতে দেননি মুশফিকু রহিম ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ইয়াসির আলি। দিন শেষে মুশফিকুর ১২ ও ইয়াসির ৮ রানে অপরাজিত আছেন। আফ্রিদি ৬ রানে ৩ উইকেট নেন। 

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর