ঢাকা, ০৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, ২০২৫ || ২০ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৪২৯

বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়কে টার্নিং পয়েন্ট বললেন বিশ্বকাপজয়ী ফিঞ্চ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:১৫ ১৫ নভেম্বর ২০২১  

নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে  অস্ট্রেলিয়া। পাঁচবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের  শিরোপা জয় করলেও  সপ্তম আসরে এসে সংক্ষিপ্ত ভার্সনে প্রথম শিরেপার দেখা পেল অসিরা। গতরাতে দুবাইয়ে হওয়া সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। মূলত  সুপার টুয়েলভে  বাংলাদেশের বিপক্ষে  জয়টিকেই টুর্নামেন্টে নিজ দলের টার্নিং  পয়েন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক আ্যারিন ফিঞ্চ।

 

সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১এ বাংলাদেশকে এক কথায় উড়িয়ে দিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। টাইগারদের ৭৩ রানে অলআউট করে দিয়ে মাত্র ৩৮ বল ও ২ উইকেট খরচ করেই জয় তুলে নেয় অসিরা। ৮ উইকেটের দুর্দান্ত জয়ের সাথে রান-রেটও অনেকখানি বাড়িয়ে নিতে পারে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের মাধ্যমেই সেমিফাইনালের দৌঁড়ে টিকে যায় অসিরা।  

 

কারন ঐ সময় সেমিফাইনালে দৌড়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান প্রতিন্দ্বন্দি ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের টপকাতে হলে শুধুমাত্র জয়ই নয়, রান রেটের হিসাবটাও বড়সড় ফ্যাক্টর ছিলো। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতে রান রেটে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে অনেকখানি এগিয়ে যায় অসিরা। শেষ পর্যন্ত ঐ রান রেটের উপর ভর করেই সেমিতে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। 

 

এরপর সেমিতে পাকিস্তান ও ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুললো অস্ট্রেলিয়া। তাই এই শিরোপা জয়ের পেছনে বাংলাদেশের বিপক্ষে  জয়টাকেই  টার্নিং পয়েন্ট বললেন অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। 
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে ফিঞ্চ বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা বিশাল অর্জন। সতীর্থরা পুরো আসরে যেভাবে লড়াই করেছে তাতে আমি  গর্বিত। অবশ্যই বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়টা আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। তখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। আমাদের শক্তভাবে ঘড়ে দাঁড়াতে  হতো এবং দল ও ব্যাক্তিগত পারফরমেন্সে আমরা সেটাই করেছি।’

 

দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করতে ভুলে যাননি ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্নারের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছি তা বিশ^াস করতে পারি না। তবে এটা ভাল হয়েছে। কারণ খোচা খেয়ে ভালুক  জেগেছে। জাম্পা আমার কাছে টুর্নামেন্ট সেরা, ম্যাচ নিয়ন্ত্রন করেছে সঠিক সময়ে উইকেট শিকার করেছে। মিচেল মার্শ  টুর্নামেন্ট শুরু থেকেই তিন নম্বর পজিশনে  নির্ভরযোগ্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইনজুরি নিয়ে খেলেও, নিজের কাজটা দারুণভাবে করেছে ওয়েড। সেমিফাইনালে মার্কাস স্টয়নিসের সাথে সেরা পারফরমেন্সই করেছে সে। এরা ছাড়াও দলের সবাই পুরো আসর জুড়ে ভালো খেলেছে।’

 

ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়  হয়েছেন মিচেল মার্শ। আর ৭ ম্যাচে ৪৮ দশমিক ১৬ গড়ে ২৮৯ রান করে  টুর্নামেন্ট সেরা হন ওয়ার্নার।  ওয়ার্নার  টুর্নামেন্ট সেরা হবেন, তা আসর শুরুর আগেই অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে বলে রেখেছিলেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্নার টুর্নামেন্ট সেরা হতে পারে, এটা আপনি আশা করেননি? আমি অবশ্যই আশা করেছি। এক বর্ণও মিথ্যে বলছি না, কয়েক মাস আগে জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে ফোন করে বলেছিলাম, ওয়ার্নারকে নিয়ে চিন্তা করো না, সে ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট হবে।’

 

টুর্নামেন্টের মাঝপথে দলের স্পিনার এডাম জাম্পাও সেরা হতে পারেন বলে মনে করেছিলেন ফিঞ্চ, ‘টুর্নামেন্টে মাঝপথ মনে হয়েছিলো, টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জ্যাম্পাও পেতে পারে। কারন বল হাতে দারুন করছিলো সে। তবে ওয়ার্নার অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। সব সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সেরাটা বের করে আনেন । টুর্নামেন্টে ওয়ার্নার  কয়েকটি ইনিংস অসাধারণ ছিল।’

 

ফাইনালে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নিয়ে  রান চেজ করে ম্যাচ ও বিশ^কাপ জয় করে অসিরা। ফাইনালের মঞ্চে টস বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, টস এ ম্যাচে বড় প্রভাব ফেলেছে। সবাই দেখেছে, ম্যাচের শেষ দিকে শিশিরের প্রভাব ছিল। স্লোয়ারগুলো উইকেটে ততটা কাজ করেনি। আমি জানি না, কিভাবে আমি সাত ম্যাচে ছয়বার টস জিতেছি। সম্ভবত ভাগ্য সহায় ছিলো।’

 

টস জয়ে ভাগ্য থাকলেও ফিঞ্চের মতে  নিজেদের সেরাটা দিয়েই ফাইনাল জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটু ভাগ্যের সহায়তা লাগেই। আমরা সাত ম্যাচের ছয়টায় টস জিতে অনেক এগিয়ে গেছি। তবে একই সাথে খুব ভালো ক্রিকেটও খেলেছি। আমাদের আগ্রাসনে  প্রতিপক্ষ পেছনে পড়ে গেছে।’

 

ফাইনাল জয়ের  টার্নিং নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে মুচকি হেসে অসি অধিনায়ক বলেন, ‘আমার আউট ফাইনালের টার্নিং পয়েন্ট। আমি আউট হওয়ার পরই ওয়ার্নারের সাথে আক্রমনাত্মক জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডের উপর চাপ বাড়িয়েছিলেন মার্শ। এমন  সময় সেটির বড় প্রয়োজন ছিলো।’ 

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর