ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর বুধবার, ২০২৫ || ২৫ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৪১০

রেকর্ডময় ম্যাচে ইমনের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে ম্লান শান্তর শতক

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৩০ ৮ ডিসেম্বর ২০২০  

তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে ম্লান হয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর গড়া টুর্নামেন্টের প্রথম সেঞ্চুরি। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ইমনের ম্যাজিকাল সেঞ্চুরিতে ভর করে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে ৮ উইকেটে পরাজিত করেছে ফরচুন বরিশাল। এই জয়ে টুর্নামেন্টে এখনো টিকে থাকল তামিম ইকবালের দল।

 

এর আগে অধিনায়ক শান্তর সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে পাহাড় সমান ২২০ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী। কিন্তু সেই দলটিকেই হারিয়ে প্লে অফে খেলার সুযোগ জিইয়ে রাখল বরিশাল। ম্যাচের প্রথমার্ধের পর কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি রাজশাহীকে এভাবে ছিটকে পড়তে হবে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ জয় করা ইমন একেবারে সাধারণভাবে যেন কাজটি সম্পন্ন করে দিয়েছেন। মাত্র ৪২ বলে অপরাজিত ১০০ রান করে ১১ বল বাকি থাকতেই বরিশালকে জয় এনে দেন তিনি। কভার অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের দ্রুততম সেঞ্চুরিটি পূর্ণ করেন ইমন। একইসঙ্গে দলকেও পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।

 

ক্যারিয়ারের প্রথম এই সেঞ্চুরির পথে ইমন নয়টি বাউন্ডারি ও সাতটি ওভার বাউন্ডারির সহায়তা নিয়েছেন। এটি ছিল কোনও বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের দ্রুততম সেঞ্চুরি। এমনকি নিজ দলের অধিনায়ক তামিমের সেঞ্চুরির রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ৫০ বলের মোকাবেলায় দ্রুততম সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন তামিম। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ৬১ বলে ১৪১ রান তুলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। এর আগে শান্ত ওই রেকর্ড ভাঙার বেশ কাছে এসেও শেষ পর্যন্ত পারেননি। যেটিকে এখন অনেক দূরে ঠেলে দিলেন ইমন।

 

এই নিয়ে টুর্নামেন্টে টানা পঞ্চম ম্যাচে পরাজিত হল রাজশাহী। শুরুতে দুই ম্যাচে জয়লাভ করেছিল তারা। অবশ্য দ্বিতীয় এই জয়েও তালিকার তলানি থেকে উঠে আসতে পারেনি বরিশাল। কারণ রান রেটের দিক থেকে রাজশাহীর পেছনে পড়ে আছে তারা। তবে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে সক্ষম হল তামিম বাহিনী।

 

রাজশাহীর বড় টার্গেটের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই অবিচল ছিলেন বরিশালের দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও তামিম। শুরুতে ওভার প্রতি ১০ রান সংগ্রহ করতে থাকেন তারা। ১৫ বলে ২৭ রান সংগ্রহের পর সাইফ আউট হয়ে গেলে তামিমের সঙ্গে দলের হাল ধরেন ইমন। শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন তিনি। এসময় অধিনায়ক তামিমের চেয়ে বেশি আগ্রাসী ছিলেন ইমন। রাজশাহীর বোলারদের পাড়া মহল্লার বোলারে পরিণত করেন তিনি। এসময় তামিমের সঙ্গে ৫৩ বলে ১১৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন ইমন।

 

পাঁচ বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩৭ বলে ৫৩ রান করে তামিম রানআউট হওয়ার পরও অপর প্রান্তে থেকে ব্যাটিং তান্ডব অব্যাহত রাখেন ইমন। এভাবে কোনোরকম শংকাতে না রেখেই দলকে জয় এনে দেন তিনি। তার সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন আরেক উদীয়মান ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন। তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৬ বলে অপরাজিত ২৬ রান করেন তিনি।

 

এর আগে প্রথমে ব্যাটিং করতে গিয়ে শান্তর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে বরিশালের বিপক্ষে ৭ উইকেটে পাহাড় সমান ২২০ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী। গুরুত্বপূর্ণ ওই ম্যাচে শান্ত মাত্র ৫২ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। যেটি তখনো পর্যন্ত ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনও ব্যাটসম্যানের তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। তবে ইমন তান্ডবের পর সেঞ্চুরিটি নেমে যায় চতুর্থ স্থানে। ৫৪ বলে ১০৯ রান সংগ্রহ করে বিদায় নেয়ার আগে চার বাউন্ডারি ও ১১ ওভার বাউন্ডারি হাঁকান শান্ত। এর মধ্য দিয়ে তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এক ইনিংসে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিমের সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডে ভাগ বসান।

 

শান্তর পাশাপাশি সতীর্থ তরুণ তারকা আনিসুল ইসলাম ইমনের ব্যাটিংও ছিল আগ্রাসী। সাত চার ও তিন ছয় হাঁকিয়ে ৩৯ বলে ৬৯ রান সংগ্রহ করেন তিনি। তারা উদ্বোধনী জুটিতে ১৩১ রান সংগ্রহ করনে। এটিই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ এবং দ্বিতীয় শতোর্ধ্ব পার্টনারশিপ। ফিরতি ক্যাচে সুমন খান ওপেনার আনিসুলকে সাজঘরে ফেরানোর পর রাজশাহীর হয়ে শান্ত ছাড়া আর কোনও ব্যাটসম্যান অবশ্য সুবিধা করতে পারেনি। শান্তর ব্যাটিংয়ের কারণেই টুর্নামেন্টের প্রথম দল হিসেবে দুই শতাধিক রানের স্কোর গড়তে সক্ষম হয় রাজশাহী।

 

তবে ম্যাচটিকে আরো জমজমাট করে দিয়েছেন বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। শেষ ওভারে হ্যাটট্রিকসহ প্রতিপক্ষের চার উইকেট একাই তুলে নিয়েছেন তিনি। যে কারণে রাজশাহীর সংগ্রহটা আর বড় হতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনও বাংলাদেশি বোলার হিসেবে তৃতীয় হ্যাটট্রিকের স্বাদ নিলেন রাব্বি। এর আগে আল আমিন হোসেন দু’বার এবং আলিস আল ইসলাম একবার হ্যাটট্রিক করেছেন। বরিশালের হয়ে রাব্বি ৪৯ রানে চারটি এবং সুমন খান ৪৩ রানে দুটি উইকেট লাভ করেন।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর