ঢাকা, ১৯ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৬৫২

ইন্দিরা-থ্যাচার-মার্কেলকে টপকে নারী নেতৃত্বে শীর্ষে হাসিনা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:২২ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা। ১৯৮১ সালে প্রতিকূল পরিবেশে তিনি ফিরে এসেছিলেন দেশে। হাল ধরেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী গণমানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের।

চোখে ছিল সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন, সম্বল ছিল জনমানুষের সমর্থন ও পিতার রেখে যাওয়া আদর্শ। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে নানা চড়াই উৎরাই, ষড়যন্ত্র, ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে সেই থেকে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন তিনি।

শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তার দলের বিজয়ের পর প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। এরপর বিগত দু’দশকে প্রায় ১৬ বছর দেশের সেবা করেছেন।

এর মধ্যদিয়ে ‘দীর্ঘ সময় দেশ শাসনের ক্ষমতায় থাকা’ বিশ্বের নারী নেত্রীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় নিজের নামটি লিখিয়ে নিয়েছেন তিনি। পেছনে ফেলেছেন ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, ব্রিটেনের মার্গারেট থ্যাচার ও শ্রীলঙ্কার চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার মত বিশ্বখ্যাত নারী নেত্রীদের।

আন্তর্জাতিক সংস্থা উইকিলিকসের জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেসব তথ্য নিয়ে সোমবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া (ইউএনআই)।

উইকিলিকসের জরিপে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা এখন নারীদের পুনর্জাগরণের প্রতীক।’

সেইন্ট লুসিয়ার গভর্নর জেনারেল ডেম পিয়ারলেত্তে লুজি। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা নারী রাষ্ট্রপ্রধান তিনি। ১৯৯৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ২০ বছর ১০৫ দিন দেশকে শাসন করলেও বিশ্বরাজনীতিতে ততটা পরিচিত নন তিনি।

১ আগস্ট, ১৯৮০ সাল থেকে ১ আগস্ট ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত টানা ১৬ বছর আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন ভিগডিস ফিনবোগাদোত্তির। তিনিও আন্তর্জাতিক ঘরানায় তিনিও সুপরিচিত নন।

১৪ বছর ৩২৮ দিন ডমিনিকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ শাসন করেছেন ডেম উজেনিন। আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ম্যারি ম্যাকেলিস ক্ষমতায় ছিলেন ১৩ বছর ৩৬৪ দিন।

এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম নারী রাষ্ট্রপ্রধান জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলো মার্কেল। ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর দেশের ক্ষমতাভার গ্রহণ করে এখনো জার্মানি শাসন করছেন তিনি।

অন্যদিকে শেখ হাসিনাও টানা তৃতীয়বারসহ মোট চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এখন দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শাসন করেন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত। মাঝখানে এক মেয়াদ বিরতি দিয়ে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় আসে তার দল। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই ক্ষমতায় আছেন তিনি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তার দল আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা।
এরইমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৫ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। চতুর্থ মেয়াদের এক বছর পার না হলেও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের রেকর্ডকে অতিক্রম করা একমাত্র নারী নেত্রী শেখ হাসিনা।

থ্যাচার ৪ মে, ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯০ সালের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ১১ বছর ২০৮ দিন ব্রিটেনের শাসক ছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইন্দিরা গান্ধীও বিভিন্ন মেয়াদে ১৫ বছর দেশ শাসন করেছে। শ্রীলঙ্কা চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট হিসেব সর্বমোট ১১ বছর ৭ দিন শাসন করেছেন।

নারী শাসকগণের মধ্যে মাত্র চারজন শাসকই বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেদের নাম ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। তারা হলেন- ইন্দিরা গান্ধী, মার্গারেট থ্যাচার, অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও শেখ হাসিনা। তারা সবাই নিজের দেশকে একটি নতুন সম্ভবনার দুয়ারে নিয়ে গেছেন।

চতুর্থবার ক্ষমতায় আরোহনের পর শেখ হাসিনা বিশ্বে সুপরিচিত অন্যান্য নারী নেতাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিক্রম করে গেছেন।

গেল কয়েক বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামাজিক-অর্থনৈতিক খাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করেছে। মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৯০০ ডলারে, যা কয়েকবছর আগেও ছিল হাজার ডলারের নিচে।

তার আমলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হয়েছে। ২০১৮ সালে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফল ভাবে উৎক্ষেপণ করছে। যেটি তার সরকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের কারণে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ডিজিটাল প্রযুক্তি পৌঁছে গেছে। ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা এখন দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

বর্তমান বিশ্বের জন্য বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের উদহারণ হিসেবে সারা বিশ্বের চোখ এখন বাংলাদেশের দিকে।

বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও সেবার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বীকৃতি স্বরূপ অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বহু পুরস্কারে সম্মানিত করেছে বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনাকে।