ঢাকা, ১৩ অক্টোবর সোমবার, ২০২৫ || ২৭ আশ্বিন ১৪৩২
good-food
৯০৮

আস্থা ভোটে কোনোমতে টিকে গেলেন টেরিজা মে

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১০:৩৬ ১৭ জানুয়ারি ২০১৯  

আস্থা ভোটে কোনোমতে টিকে গেলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে।

মাত্র একদিন আগেই ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটিতে বিপর্যয়কর হার হয়েছে তার সরকারের।  

ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার ভোটের পরপরই লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন রক্ষণশীল দলের সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে একদিনের ব্যবধানে এই ভোটও হয়।

দীর্ঘ আলোচনার পর বুধবার ভোট ফলাফলে দেখা যায়, টেরিজা মের সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন ৩০৬ জন পার্লামেন্ট সদস্যবিপরীতে সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৩২৫ জন।

ফলে ১৯ ভোটে জয় নিয়ে কোনোমতে টিকে থাকল টেরিজা মের সরকার; যাকে এখন ব্রেক্সিটের নতুন পথরেখা খুঁজতে হবে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের স্বাদ নেয়ার এক দিন বাদেই প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মেকে নতুন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়।

তবে মঙ্গলবারের ভোটের ফল যেমন আগে থেকে অনুমান করা যাচ্ছিল, তেমনি বুধবারের ভোটের ফলও অনেকটা অনুমিতই ছিল।

 ভোটের নিজেদের হারের পর জেরেমি করবিন বলেছেন, কোনো চুক্তি ছাড়াই ইইউ ছাড়ার মতো ঘটনা যেন না ঘটে, টেরিজা মেকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

আর টেরিজা মে ব্রেক্সিট চুক্তির নতুন খসড়া তৈরিতে পার্লামেন্টের সব দলের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব রেখেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের পথরেখার যে পরিকল্পনা টেরিজা মে হাউস অব কমন্সে উপস্থাপন করেছিলেন, মঙ্গলবার ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টে তা ৪৩২-২০২ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের ইতিহাসে এর আগে আর কোনো প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলকে এত বড় হার মেনে নিতে হয়নি। লেবার পার্টি ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের এমপিদের পাশাপাশি টেরিজা মের রক্ষণশীল দলের অনেকেই ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন।

২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগকরলে টেরিজা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নতার পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন।

রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় ২১ মাস।

 

আগামী ২৯ মার্চ সেই সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার আগে যুক্তরাজ্যকে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে ইইউর সঙ্গে আলোচনা করে তৈরি করা খসড়া চুক্তি মঙ্গলবার পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে তুলেছিলেন মে।

হাউস অব কমন্সে এই ভোট হওয়ার কথা ছিল গত ডিসেম্বরেই। কিন্তু নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রী মে তা পিছিয়ে দেন।

মের আশা ছিল, হয়ত এই সময়ে কিছু এমপির সমর্থন তিনি আদায় করতে পারবেন। কিন্তু তা যে হচ্ছে না, তা এমপিদের কথায় আগেই বোঝা গিয়েছিল।

তারপরও টেরিজা পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নেননি, যার বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২০২২ সাল পর্যন্ত।

সাধারণত ধরনের বড় পরাজয়ের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তবে বলাই বাহুল্য, এটা সাধারণ কোনো পরিস্থিতি নয়’- বলছে বিবিসি। 

 

বুধবারের আস্থা ভোটে টিকে গেলে ব্রেক্সিট প্রশ্নে আরেকটি প্রস্তাব আগামী সোমবার সামনে আনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। তবে সেই প্রস্তাব কেমন হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

 

ভোটে হারের পর জেরেমি করবিন বলছেন, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট যেন না হয়

তাতেও যদি এমপিরা মন না বদলান, তাহলে কয়েকটি বিকল্প তার সামনে থাকবে। এর একটি হলনো ডিল ব্রেক্সিট অর্থাৎ, ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবে, তবে কোনো চুক্তি হবে না।

সেক্ষেত্রে বিচ্ছেদ হবে হুট করেই, বিচ্ছেদ পরবর্তী সম্পর্ক কেমন হবে, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কর কাঠামো কেমন হবে, কূটনৈতিক সম্পর্কের ধরনই বা কী হবে- সেসব বিষয় অনির্ধারিতই থেকে যাবে।

এখন ইইউ’র দেয়া চূড়ান্ত সময়সীমা ২৯ মার্চ থেকে আরও বাড়িয়ে নেয়ার কথাও ভাবতে পারে যুক্তরাজ্য সরকার।

আরও একটি বিকল্প আছে, সেটি হল আরেকটি গণভোট। ব্রিটেনের নাগরিকদের কাছে আবারও জানতে চাওয়া হবে- তারা সত্যিই ব্রেক্সিট চান কি না। সেজন্যও ইইউ’র কাছে বাড়তি সময় চেয়ে নিতে হবে।

 

                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                 

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর