ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭৭১

দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়নি?

কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে আবরারের মৃত্যু

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:৫৮ ২ নভেম্বর ২০১৯  

দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষায়িত ম্যাগাজিন কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুতে চলছে তুমুল সমালোচনা-ক্ষোভ বিক্ষোভ। ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে তদন্ত কমিটি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।


শুক্রবার বিকালে কলেজ ক্যাম্পাসে দৈনিক প্রথম আলোর সাময়িকী কিশোর আলোর একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার (১৫)।


এ ঘটনায় আয়োজকদের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা বলছে, সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণেই আবরারকে এভাবে মারা যেতে হয়েছে।


শনিবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা চিত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দিতে আয়োজক কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোর কাছে দাবি করে।
তখন কলেজের অধ্যক্ষ এসে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের বিষয়ে আশ্বস্থ করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।


কলেজ অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম আহমেদ বলেন, নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


কলেজের দিবা শাখার ছাত্র আবরারের বাড়ি নোয়াখালী। ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিবারের সঙ্গে থাকতো সে।


পরিবারের আবেদনে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান মোহাম্মদপুর থানার ওসি জিজি বিশ্বাস।


তিনি বলেন,  ‘কি আনন্দ’ শিরোনামেও ওই অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা মঞ্চের পেছনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আবরার। আয়োজকরা তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একজন শিক্ষক বলেন, আয়োজকরা তাকে কাছের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যায়।


ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ওই অনুষ্ঠান আয়োজনের অংশীদার ছিল বলে জানান তিনি।
কছের হাসপাতালে না নেয়ার ব্যাপারেও ক্ষুব্ধ সহপাঠী শিক্ষার্থীরা। 


এ বিষয়ে কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন,  “গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে কিশোর আলোর অনুষ্ঠান দেখতে এসে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজের ক্লাস নাইনের ছাত্র নাইমুল আবরার বিদ্যুতায়িত হয়। ওখানেই জরুরি মেডিক্যাল ক্যাম্পে তাকে নেয়া হয়। দুজন এফসিপিএস ডাক্তার দেখেন। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে বলেন। হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

 ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো -  ১. ঘটনা চলাকালীন সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে হবে,  ২. অনুষ্ঠানের মিস ম্যানেজমেন্টের দায় স্বীকার করে কিশোর আলো, ইভেন্ট অর্গানাইজার, আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত বক্তব্য দিতে হবে,  ৩. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছাত্রদের হাতে পৌঁছাতে হবে, ৪. শুধু দুর্ঘটনা নয়, তাদের গাফিলতি, মিসম্যানেজমেন্ট এবং উদাসীনতা উল্লেখ করে পত্রিকায় উল্লেখ করে বিবৃতি দিতে হবে।

৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো আদায় না হলে পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

নাঈমুল আবরারের মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রশ্ন, মৃত্যুর খবর চেপে রেখে কেন গান চললো, অনুষ্ঠান চললো?

 

এক শিক্ষার্থী বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটার সময় সে আহত হয়েছে, ডাক্তাররা বলছে মারা গেছে। তখন কেনো ঘটনাটা জানানো হয়নি। অনুষ্ঠানস্থলের পাশেই ওর ডেডবডিটা ছিল। কেন অনুষ্ঠানটা চললো। এরপরেও কেন দুই ঘণ্টা ধরে গান চললো।

আবরারের এক সহপাঠী বলেন, এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটলো অথচ আবরারকে মোহাম্মদপুর থেকে নিয়ে যাওয়া হলো মহাখালীতে। এতদূর নিতে হলো কেন? আশপাশেই তো কত হাসপাতাল ছিল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ছিল।

জানাজার পর এক শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১২টার পর জানাজা দেয়া হলো। এটা কি কোনো কিছু ধামাচাপা দেয়ার জন্য হচ্ছে? তিনটার দিকে ঘটনাটা ঘটেছে। আমরা জানতে পেরেছি রাত ৯টার পরে। কিন্তু ‘কিশোর আলো’র পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হলো না।