ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭৮২

ফোর্বসের তালিকায় সেরা ২ বাংলাদেশী তরুণ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:২১ ২ এপ্রিল ২০১৯  

২০১৯ সালের ‘থার্টি আন্ডার থার্টি এশিয়া লিস্ট’ চূড়ান্ত করেছে  যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফোর্বস ম্যাগাজিন। এ তালিকায় সাফল্যের খাতায় উঠে এসেছে দুই বাংলাদেশী তরুণের নাম।

বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং সেবা ‘পাঠাও’য়ের প্রধান নির্বাহী হুসাইন এম ইলিয়াস কনজুমার টেকনোলজি খাতে হয়েছেন এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের শীর্ষ ৩০ তরুণ উদ্যোক্তার একজন।

 

আর কার্টুনিস্ট আবদুল্লাহ আল মোরশেদের নাম এসেছে ‘মিডিয়া, মার্কেটিং অ্যান্ড অ্যাডভার্টাজিং’ ক্যাটাগরির সেরা ৩০ তরুণের তালিকায়। ‘দি গ্লোবাল হ্যাপিনেস চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে ধারাবাহিক কার্টুন এঁকে দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি।

 

অন্যান্যবারের মত এবারও মোট দশ ক্যাটাগরিতে সেরাদের নিয়ে তিনশ জনের এই তালিকা তৈরি করেছে ফোর্বস। নতুন উদ্যোগ, নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা, উদ্ভাবনী চিন্তা ও সাফল্যের বিবেচনায় তিন হাজার নাম থেকে বাছাই করা এই ৩০০ জন মোট ২৩টি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

 

হুসাইন ইলিয়াস আর সিফাত আদনান মিলে ২০১৬ সালে গড়ে তোলেন রাইড শেয়ারিং সেবা, অন ডিমান্ড লজিস্টিকস ও ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ‘পাঠাও’।

 

পাঁচটি মোটরবাইক আর ৩০ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করা পাঠাও এখন এই খাতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। বাইক ও গাড়িতে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি জিনিসপত্র পৌঁছে দেয়া এবং বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়ার সেবা দিচ্ছেন পাঠাওয়ের রাইডাররা।

 

যানজটের রাজধানী ঢাকায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর পাঠাওয়ের সেবা এখন বিস্তৃত হয়েছে দেশের আরও চারটি বড় শহরে এবং নেপালের কাঠমান্ডুতে। আর এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ৫০ লাখ রাইডার, যাদের ‘ফ্রিল্যান্স’ কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে পাঠাওয়ের কল্যাণেই।

 

ফোর্বস লিখেছে, পাঠাওয়ের অ্যাপটিকে দেশের সেরা অ্যাপ হিসেবে পরিচিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন ইলিয়াস। সেই পাঠাওয়ের বাজার মূল্য এখন ছাড়িয়েছে ১০ কোটি ডলার।

 

স্যাটায়ার ম্যাগাজিন উন্মাদের সহকারী সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মোরশেদ নতুন এক যুদ্ধ শুরু করেন ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে। শুরু হয় যুদ্ধ আর ধ্বংসের বিরুদ্ধে তার কলম-তুলির লড়াই।

 

সংবাদ মাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নির্মমতা আর বেদনার ছবিগুলোকে তিনি পাল্টে দিতে শুরু করেন আশা আর আনন্দের বার্তায়। এর ধারাবাহিকতায় শুরু হয় কার্টুনিস্ট মোরশেদ মিশুর ‘গ্লোবাল হ্যাপিনেস চ্যালেঞ্জ’ সিরিজ।

 

মোরশেদ মিশুর ওই সিরিজ দ্রুত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর নজর কাড়ে। অন্যান্য দেশের আঁকিয়েরাও যোগ দেন এই চ্যালেঞ্জে।

 

ফোর্বস লিখেছে, যুদ্ধ আর সহিংসতা না থাকলে এই পৃথিবী কতটা সুন্দর হতে পারত, সেটাই কার্টুনের মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন মোরশেদ মিশু।

 

আর মোরশেদ মিশু বলছেন, ফোর্বসের এই স্বীকৃতি হয়ত দেশের তরুণ কার্টুনিস্টদেরও উৎসাহ যোগাবে।

 

তিনি বলেন, এই ধরনের রিকগনিশনগুলো হয়ত নতুন যারা এই কাজে আগ্রহী হবে, তাদের জন্য ইনসপিরেশন হিসেবে কাজ করবে। আর প্রাপ্তির জায়গাটা হচ্ছে, বাংলাদেশের নামটা আমার নামের পাশে চলে আসে। বাংলাদেশকে আমার কাজ দিয়ে পরিচিত করতে পারছি বিশ্বের ময়দানে।

 

‘গ্লোবাল হ্যাপিনেস চ্যালেঞ্জ’ সিরিজে এ পর্যন্ত ১১টি ইলাস্ট্রেশন করেছেন মিশু। আরও ১৯টি আঁকার ইচ্ছা আছে তার।

 

২০১৮ সালের শুরু থেকে তিনি যুদ্ধের হৃদয় বিদারক ও ভয়ংকর দৃশ্যের ছবিগুলোতে মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্মে রূপান্তর শুরু করেন।

তার উদ্দেশ্য ছিলো কিভাবে সহিংসতা বা যুদ্ধ ছাড়া বিশ্বকে কতটা সুন্দর দেখায় সেটি তুলে ধরা।

 

তার কাজ ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি গ্লোবাল হ্যাপিনেস অ্যাওয়ার্ড পান এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমে তার কার্টুন প্রকাশিত হতে শুরু করে।

 

মোরশেদ মিশু'স ইলাসট্রেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা মোরশেদ এ মূহুর্তে কার্টুন ম্যাগাজিন উন্মাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর।

 

 

ফোর্বসের এবারের তালিকায় বড় জায়গা দখল করে আছেন ভারত ও চীনের তরুণরা। চীনের ৬১ জন এবং ভারতের ৫৯ জন তরুণ এবারের থার্টি আন্ডার থার্টি লিস্টে এসেছেন।

 

ফোর্বস বলছে, তাদের উদ্যোগ যে কেবল তাদের দেশকে বদলে দিচ্ছে তাই নয়, এর সুফলগুলো যাতে দীর্ঘমেয়াদী হয়, সেজন্যও তারা কাজ করছেন। 

 

ফোর্বস জানিয়েছে, এবারের তালিকা তৈরিতে শুধু উদ্যোক্তা হিসেবে সফল ব্যক্তিদেরই নির্বাচন করা হয়নি। বিশেষভাবে খোঁজা হয়েছে সেসব উদ্যোক্তাদের, যারা নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছেন; যাদের উদ্ভাবন ও প্রচেষ্টা শুধু নিজ দেশ বা অঞ্চলে লক্ষ্যণীয় পরিবর্তনই আনছে না, বরং দীর্ঘমেয়াদী একটি ইতিবাচক প্রভাব রাখার পথে কাজ করছে, বিশেষ করে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নশীল ও উদীয়মান বাজার ব্যবস্থায়।

 

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর