ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১২২০

ডেঙ্গুর প্রকোপ

যেসব কারণে সারাদেশে বাড়ছে এডিস মশা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৩৭ ২৪ জুলাই ২০১৯  

ঢাকার অধিবাসী মমতাজ শাহিন খান। তার পরিবারের একজন সদস্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি বলছেন, বাসার সঙ্গে লাগোয়া বাগানে কাজ করেছিলেন সেই সদস্য। পরে হাসপাতালে নিয়ে নিশ্চিত হন, উনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

মমতাজ বলেন, অনেক জ্বর এবং পরে মুখ দিয়ে রক্তও গেলো। আমরা কোনো ঝুঁকি নেইনি। হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এ রোগীর মতো অসংখ্য জন নতুন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

তবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে রাজী নন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সাব্রিনা। তিনি বলেন, কেস বেশি হচ্ছে। কিন্তু প্যানিক হওয়ার কিছু নেই। ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা সবাই এখন জানে। হাসপাতালগুলোতে নজরদারি আরও শক্তিশালী হয়েছে। সেজন্যই ঢাকার বাইরের কেসগুলো জানা যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে মশা এখন ততটা উদ্বেগের বিষয় না।

তবে পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, সেজন্য এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের জন্য বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সবার আরও সচেতনতার ওপর জোর দেন তিনি।

এডিস মশা বৃদ্ধির প্রধান দুটি কারণ

মশা নিয়ে গবেষণা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তার মতে, এবার সচেতন হওয়া বেশি জরুরি। কারণ কয়েকটি কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে। তিনি বলেন, এবার ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টি হয়েছে। এডিস মশার ডিম ছয় মাস পর্যন্ত শুকনো স্থানে বেঁচে থাকতে পারে। এবার আগেভাগে ও এখন থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে।

আবার ঢাকাসহ সারাদেশে পানির স্বল্পতার কারণে মানুষ বালতি কিংবা ড্রামে পানি জমিয়ে রাখে। আর বিভিন্ন ধরণের নির্মাণ কাজের সাইটগুলোতে চৌবাচ্চা, ড্রাম এডিস মশার বিস্তারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন তিনি।

দেশজুড়ে জেলা উপজেলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় মি. বাশার মনে করছেন, নির্মাণ সাইটগুলোতে পানি জমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে পারে। ঢাকায় ডেঙ্গু নিয়ে প্রচার প্রচারণা কিছু চোখে পড়লেও বাইরে বিশেষ করে মফস্বল এলাকাগুলোতে এ নিয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ নেই বললেই চলে।

কুষ্টিয়ার শিরিন সুলতানা বলছেন, তাদের এলাকায় প্রচুর মশা। কিন্তু মশা নিধনের কোনো ব্যবস্থা তিনি কখনো দেখেননি। বলছেন, স্প্রে বা কয়েল জ্বালানো ছাড়া টেকা যায় না। কিন্তু আমি কখনো দেখিনি ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে কোনো কিছু করা হচ্ছে।

তবে ঢাকার দুটি সিটি কর্পোরেশন থেকে সতর্কতামূলক প্রচারের পাশাপাশি মশা মারতে ঔষধ দিতে দেখা যায় মাঝে মধ্যে। দুটি কর্পোরেশন থেকেই বলা হচ্ছে ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলছেন, মশা প্রতিরোধে সবার সচেতনতাই একমাত্র উপায়। তবে আক্রান্তদের চিকিৎসায় রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করেছেন তারা।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে পরিস্থিতি এখন বিদ্যমান তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সারাদেশে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। ঢাকা বা বাইরে যেখানেই কারও জ্বর হলে বিলম্ব না করে হাসপাতালে যেতে হবে। আর এটি করা হলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর