ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৫১

সন্তান পালনে মা-বাবার যা যা জানা উচিত

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৩৬ ২ মার্চ ২০২৩  

সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর মা-বাবার ওপর একটা আলাদা দায়িত্ব চলে আসে। কী করলে সন্তান সুস্থ থাকবে, কীভাবে রাখলে সন্তানের কোনো সমস্যা হবে না ইত্যাদি। যা নিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকেন বাবা-মা। সমস্যার সমাধান পেতে অনেক সময় ডাক্তার, পরিচিত বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের কাছ থেকে প্রচলিত বা আধুনিক পরামর্শও পাওয়া যায়। কিন্তু দেখা যায় এসব পরামর্শ কারও সঙ্গে মিলছে তো কারও সঙ্গে সাংঘর্ষিক হচ্ছে। তখনই বিপাকে পড়েন বাবা-মায়েরা।


সন্তান পালনে যে টিপসগুলো অবশ্যই মা-বাবার জানা উচিত

# নবজাতকের প্রথম খাবার হোক মায়ের বুকের শালদুধ। শালদুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জন্মের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ শিশুর খাবার হিসেবে যথেষ্ট। ডাক্তারের সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না থাকলে শিশুকে বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত করবেন না।

# জন্মের পর পরই শিশুর ভিডিও করা থেকে বিরত থাকুন। ১৮ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে টিভি বা ইলেকট্রনিক স্ক্রিন থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখুন।

 

# টিভি ট্যাব ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন দেখিয়ে শিশুকে খাওয়াবেন না।

# সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে শিশুকে সাথে নিয়ে সেলফি তুলে, ভিডিও বানিয়ে তথাকথিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন না বা তার নামে একাউন্ট খুলবেন না। এটা অনৈতিক এবং শিশুর জন্যে ক্ষতিকর হতে পারে।

# শিশু তাড়াতাড়ি হাঁটতে শিখবে ভেবে ওয়াকার ব্যবহার করবেন না। এতে শিশুর মারাত্মক আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। [আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স শিশুদের ওয়াকার ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে]

 

# সন্তান লালনের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা মায়ের। কিন্তু এ-ক্ষেত্রে মা-বাবা একে অপরের সহযোগী শক্তি।

# শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবা ও ঘনিষ্ঠ স্বজনদের সান্নিধ্যের কোনো বিকল্প নেই। আয়া-বুয়া যত্ন করতে পারলেও লালন করতে পারে না। পেশাগত ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে সন্তানের প্রতি বেখেয়াল হবেন না।

# সুষ্ঠু বিকাশের অন্যতম শর্ত হলো সুন্দর শৈশব। তাই শিশুদের প্রতি মমতাময় ও যত্নশীল হোন।

 

# যে-সব ভালো কাজ ও আচরণ সন্তানকে শেখাতে চান, সেই কথাগুলো তাকে ঘুম পাড়ানোর সময় মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলতে থাকুন। যেমন, ‘তুমি এটা হবে’/ ‘তুমি খুব ভালো, খাবার দিলে খেয়ে ফেলো’/ ‘তুমি মেধাবী, তুমি সাহসী’।

# সন্তান নাদুসনুদুস বা মোটাসোটা হয় নি বলে চিন্তিত হয়ে সারাক্ষণ তাকে খাওয়াতে থাকবেন না। হালকা গড়ন হলেও শিশু যেন দৌড়ঝাঁপে প্রাণবন্ত থাকে, সেজন্যে তার সুষম পুষ্টির দিকে মনোযোগ দিন। বাস্তব খেলাধুলায় অভ্যস্ত করুন। ক্ষুধা পেলে সে নিজেই খাবার চেয়ে নেবে।

# শিশুকে কাপড় না পরিয়ে কখনো ছবি তুলবেন না, জনসমক্ষে আনবেন না।

 

# আপনার আনন্দ বা কৌতুকের জন্যে শিশুদের রাগিয়ে দেবেন না, কাঁদাবেন না। কয়েকটি শিশু এক জায়গায় থাকলে মজা করে তাদের মধ্যে ঝগড়া-কুস্তি বাঁধাবেন না।

# কোনো শিশুকে জোর করে কোলে নেবেন না। এমনভাবে আদর করবেন না, যাতে তার কষ্ট হয় বা সে ভয় পায়। যেমন, বগলের নিচে শক্ত করে ধরে ওপরে তোলা, শূন্যে ছুড়ে দেয়া, মাথা টেনে ধরা, গাল টানা, কান টানা, চাপ দেয়া/ ঝাঁকানো, কাতুকুতু দেয়া ইত্যাদি।

# ভয় দেখিয়ে শিশুদের খাওয়াবেন না, ঘুম পাড়াবেন না। ভূত-প্রেতের কথা বলবেন না, কাউকে ভীতিকর হিসেবে উপস্থাপন করবেন না। এতে তার মধ্যে ভয় দানা বাঁধতে পারে।

 

# শারীরিক অবয়ব, খারাপ রেজাল্ট, দুষ্টুমিসহ কোনো প্রসঙ্গ তুলে শিশুকে খোঁটা দেবেন না। তার বড় সম্ভাবনার কথা বলে তাকে উৎসাহিত করুন।

# তোমাকে হাসপাতাল বা রাস্তা থেকে কুড়িয়ে/ কিনে আনা হয়েছে− এমন অবান্তর কথা শিশুকে বলবেন না। শৈশবের এ দুঃখবোধ ও নিরাপত্তাহীনতা তার ভেতরে স্থায়ী ছাপ ফেলতে পারে।

# ‘কে বেশি ভালবাসে, বাবা নাকি মা?’−এ ধরনের প্রশ্ন করে শিশুমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না।

 

# শিশু কোথাও পড়ে গিয়ে আঘাত পেলে সে স্থানটিকে পাল্টা আঘাত করতে বলবেন না। এতে সে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে।

# শিশুদের হাতে টাকা দেবেন না। মুদি দোকানে/ বাজারে একা পাঠাবেন না।

# নাম বিকৃত করে শিশুকে ডাকবেন না, খ্যাপাবেন না।

# শিশুদের দিয়ে এমন কোনো কাজ করাবেন না, যা তার আত্মবিশ্বাস বা আত্মসম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

 

# অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া শিশুদের কোনো উপহার সামগ্রী দেবেন না; চকলেট, চিপস, প্যাকেটজাত জুস অথবা ক্ষতিকর কিছু খেতে দেবেন না, তার সামনে এসব জিনিস নাড়াচাড়াও করবেন না।

# একান্নবর্তী পরিবারে সবার সন্তানকেই একনজরে দেখুন।

# ছেলেমেয়েতে বৈষম্য না করে সমান দৃষ্টিতে দেখুন। ছেলে যেমন আপনার, মেয়েও আপনার।

 

# এক সন্তানকে অন্য সন্তানের সঙ্গে তুলনা করবেন না। এতে ভাইবোনের সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়।

# সন্তানের সামনে মা-বাবা ঝগড়া করবেন না। একে অপরকে দোষারোপ করে কথা বলবেন না।

# একই ব্যাপারে মা-বাবা ভিন্ন মত দেবেন না। এতে শিশু বিভ্রান্ত হবে।

# শিশুদের সামনে কোনো ভুল করে ফেললে অকপটে দুঃখ প্রকাশ করুন। এতে আপনার প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ ও আস্থা বাড়বে।

 

# ভালো রেজাল্টের নামে সন্তানকে আত্মকেন্দ্রিক ও সমাজ-বিচ্ছিন্ন করে বড় করবেন না। ভাইবোনের সাথে শেয়ার করতে শেখান। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাথে মেলামেশার সুযোগ দিন।

# শিশু-কিশোর সন্তানের জন্যে আলাদা রুম থাকলে সারাক্ষণই সে রুমের দরজা বন্ধ করে রাখছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

# সন্তানের বন্ধু হোন। সন্তানকে ‘কোয়ালিটি টাইম’ অর্থাৎ মনোযোগী সময় দিন। আপনি যদি সময় না দেন−ফোন আড্ডা টিভি ইন্টারনেট ফেসবুক গেমস বা বাজে বই/ কমিকস এবং ক্ষতিকর বন্ধুত্ব তাকে নষ্ট করবে।

 

# আত্মীয়স্বজনের দেয়া উপহারের মধ্যে তুলনা করতে শেখাবেন না। ছোট-বড় প্রতিটি উপহারই যে মমতার প্রকাশ, তা তাকে বুঝতে শেখান।

# কোনোকিছুর লোভ দেখিয়ে পড়তে বা কাজ করতে বলবেন না। কাজ শেষে তাকে অভিনন্দন জানান ও মাঝেমধ্যে ছোটখাটো উপহার দিন।

# ভিডিও গেম বা ভার্চুয়াল গেম নয়, সন্তানকে অন্য শিশুদের সাথে বাস্তবে খেলার সুযোগ করে দিন। পরিপূর্ণ বিকাশের জন্যে মানুষের সংস্পর্শের কোনো বিকল্প নেই।

 

# শিশুকে ভালো ও সৃজনশীল কাজে যুক্ত করুন। বই পড়তে/ গণিত শিখতে/ লেখালেখি বা ছবি আঁকতে উদ্বুদ্ধ করুন। ভালো বই, সুন্দর খাতা, রং-পেন্সিল কিনে দিন।

# বয়স অনুযায়ী নিজের কাজগুলো নিজে করার ব্যাপারে শিশুকে উৎসাহিত করুন। যেমন : বিছানা, পড়ার টেবিল ও খেলনা গুছিয়ে রাখা; জুতার ফিতা বাঁধা, স্কুলব্যাগ বহন করা ইত্যাদি।

# সন্তানকে পরিবারের অংশ করে তুলুন। তাকে প্রাত্যহিক কাজে সম্পৃক্ত করে নিন। তাহলে শৈশব থেকেই সে দায়িত্ব নিতে শিখবে।

 

# কৈশোরোত্তীর্ণ হলে তাকে সঙ্গে নিয়ে মাঝেমধ্যে কাঁচা বাজারে যান।

# বোঝার বয়স হলেই পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য ও বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে যথাযথ ধারণা দিন। আর্থিক ব্যাপারে অতিরঞ্জিত ধারণা দেবেন না।

# বিষয় ও বয়স বুঝে তাদেরকেও পারিবারিক আলোচনায় অংশীদার করুন।

 

# সন্তানকে পরিশ্রমী ও কষ্টসহিষ্ণু করে গড়ে তুলুন। ‘আমরা কষ্ট করছি যাতে তোমাদের কষ্ট করতে না হয়’− এমন ধারণা দিয়ে সন্তানকে ননীর পুতুল বানাবেন না।

# ভালো-মন্দ, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করতে শেখান। অর্থাৎ ছোটবেলা থেকেই নৈতিক শিক্ষা দিলে সে লোভ প্রতারণা দুর্নীতি জুলুম থেকে দূরে থাকবে।

# সন্তানের ব্যাপারে অতিরিক্ত কৌতূহলী হবেন না। গোয়েন্দাগিরি করবেন না। কিন্তু সে কী করছে, কাদের সাথে মিশছে, সে-সম্পর্কে অবগত থাকুন।

 

# সবার সামনে শিশুকে বকবেন না। ভুল ধরিয়ে অপ্রস্তুত করবেন না। আলাদা করে মমতার সাথে বুঝিয়ে বলুন, সংশোধন করে দিন।

# কোনো কাজ করতে বলার পর সন্তান যদি বলে ‘কেন?’, এর উত্তরে বলবেন না−‘আমি বলছি তাই’। আপনার এমন মন্তব্য তার মনে স্বেচ্ছাচারিতা বা একগুঁয়েমির বীজ বুনে দিতে পারে। বরং সহজ ভাষায় বুঝিয়ে বলুন কাজটি কেন করা প্রয়োজন।

# সন্তানের যোগ্যতা নিয়ে কোনো নেতিবাচক কথা বলবেন না। কখনো বলবেন না যে, তার দ্বারা কিছু হবে না।

 

# একই কথা বার বার বলবেন না। এতে সন্তানের কাছে আপনার কথার গুরুত্ব কমে যেতে পারে। সারাক্ষণ আদেশ-নির্দেশ না দিয়ে তার করণীয় যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিন।

# শিশুদের কখনো অভিশাপ দেবেন না। আঘাত করবেন না। শাসন যেন কখনো ভীতিপ্রদ শাস্তিতে পরিণত না হয়।

# সন্তানের সাথে প্রয়োজনে দৃঢ় হতে দ্বিধা করবেন না। সন্তান বিপথে যায় ধীরে। একটা অন্যায়ে ছাড় পেলে সে আরো বড় অন্যায় করতে উৎসাহিত হয়। আপনার দৃঢ়তা তার নিরাপত্তাবোধকে বাড়িয়ে দেবে।

 

# আপনার সন্তানের নিরাপত্তা আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে। এমন কারো কাছে তাকে দেবেন না, যে তাকে শারীরিক বা মানসিকভাবে হয়রানি করতে পারে।

# খেয়াল করুন, বন্ধু আত্মীয় এমনকি একই পরিবারের কারো কাছে যেতে সন্তান দ্বিধা করছে কিনা। কাউকে দেখে বা কেউ আদর করতে ডাকলে সে ভয়ে লুকিয়ে যেতে চায় কিনা। এমন মানুষের ব্যাপারে সতর্ক হোন।

# সন্তান যদি কখনো তার লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি বলতে চায়, তাকে জেরা না করে ধৈর্য ধরে শুনুন। তাহলে করণীয় ঠিক করতে পারবেন। উত্তেজিত হবেন না, এতে সে ঘটনা চেপে যেতে পারে। এসময় আপনার মমতা তার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

 

# সন্তানকে আদরের নামে প্রশ্রয় দেবেন না ও শাসনের নামে অত্যাচার করবেন না। আদর ও শাসনের সমন্বয়ে তাকে বিকশিত হতে দিন।

# আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও ঝগড়া-বিবাদে কখনো শিশুদের জড়াবেন না।

# মাদ্রাসা/ এতিমখানার জন্যে অর্থসংগ্রহের কাজে সেখানে অবস্থানরত শিশুদের নিয়োজিত করবেন না। ক্রমাগত অন্যের করুণা বা দয়া পেতে অভ্যস্ত হলে সে শিশু কখনো স্বাবলম্বী ও দাতা হতে পারে না।

 

# শিশুসন্তানকে অতিরিক্ত উপহার, খেলনা ও বিলাসিতায় অভ্যস্ত করবেন না।

# পরিবারে মিথ্যা বলা, গালিগালাজ করা, অন্যের দুর্নাম করার প্রবণতা থাকলে তা পরিহার করুন। আত্মীয়, প্রতিবেশীর সন্তান সম্পর্কে বাসায় নেতিবাচক মন্তব্য/ সমালোচনা করবেন না।

# সন্তান কোনোকিছু চাওয়ার সাথে সাথেই তাকে তা দেয়ার অভ্যাস পরিহার করুন। তাকে অতিরিক্ত হাতখরচ দেবেন না। কিন্তু যৌক্তিক প্রয়োজন পূরণে আন্তরিক হোন।

 

# সন্তানের জন্যে ক্ষতিকর আবদারের সাথে আপস করবেন না। অন্যায় আবদার পূরণ করবেন না।

# সন্তানের যে-কোনো অর্জন ও সাফল্যে তাকে অভিনন্দন জানান, প্রশংসা করুন। যে-কোনো ব্যর্থতায় তার পাশে দাঁড়ান, উৎসাহ দিন। আপনার উৎসাহ তার ব্যর্থতাকেও সাফল্যে রূপান্তরিত করবে।

# শিক্ষার প্রথম ধাপ হিসেবে শিশুকে শুদ্ধাচার শিক্ষা দিন।

 

# নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে সম্মান করতে শেখান। বিশেষত ছেলে সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই নারীদের সম্মান করতে শেখান।

# ‘অন্য ধর্মের কারো সাথে মিশবে না’−এ ধরনের কথা শিশুকে বলবেন না। তাকে সব ধর্ম ও মতের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে গড়ে তুলুন।

# একটু একটু পড়তে শিখলেই ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে শেখান বা সাথে নিয়ে নিজে পড়ুন। তাকে প্রার্থনা করতে শেখান। নিজ ধর্মপালনে উদ্বুদ্ধ করুন। কিন্তু জোরজবরদস্তি করবেন না। এতে তার নৈতিক ও মানবিক শক্তি জাগ্রত হতে থাকবে।

 

# শিশুকাল থেকেই সন্তানের মধ্যে দানের অভ্যাস গড়ে তুলুন। দেয়ার আনন্দ তাকে উদার করবে।

# সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা দিন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত করুন।

# অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমানোর অভ্যাসকে প্রশ্রয় দেবেন না। শিশুসন্তানকে রাত ৯টার মধ্যে ঘুমাতে ও ভোরে ঘুম থেকে উঠতে উৎসাহিত করুন।

 

# দৃষ্টি-শ্রবণ-বাক্‌শক্তিহীন, চলৎশক্তিহীন এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির প্রতি সমমর্মী ও সহযোগিতাপরায়ণ হতে সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই শেখান। তাদের নিয়ে কোনো ধরনের কটূক্তি/ ব্যঙ্গবিদ্রুপ করা গর্হিত কাজ।

# শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী/ অটিজমে আক্রান্ত শিশুর প্রতি যত্নবান হোন। যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। এমন সন্তানের জন্যে নিজেকে অপরাধী/ হীন মনে করবেন না। সমাজের কাছ থেকে তাকে আড়াল করবেন না। এ শিশুটিও আর সবার মতো পরিবারের একজন সম্মানিত সদস্য−সেভাবেই তাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। একইভাবে যাদের এমন সন্তান রয়েছে, তাদের প্রতি সমমর্মী হোন। কটূক্তি করবেন না, বাঁকা চোখে দেখবেন না।

 

# শৈশব থেকেই সন্তানকে বলুন, ‘তোমাকে ভালো মানুষ হতে হবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’ জীবনের লক্ষ্য নিরূপণে তাকে সহযোগিতা করুন।

# দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বীরত্বগাথা সম্পর্কে শিশুকে ধারণা দিন। সে যে এক মহান জাতির উত্তরসূরি−এ প্রত্যয় তার মনে গেঁথে দিন।

 

# সন্তানের প্রতি আসক্ত হবেন না। সে আপনার সম্পত্তি নয়, আপনার কাছে স্রষ্টার আমানত। তাকে যথাযথ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও নৈতিক গুণে গুণান্বিত করে অনন্য মানুষরূপে গড়ে তোলা পর্যন্তই আপনার দায়িত্ব।

# সন্তানের প্রতি আপনার কর্তব্য পালনের জন্যে তার কাছে প্রতিদান প্রত্যাশা করবেন না। বার্ধক্যে তাকে আশ্রয়স্থল হিসেবে ভাববেন না। স্রষ্টাই প্রকৃত আশ্রয়দাতা।