ঢাকা, ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৫০

ছুটির দিন রোগীর সেবা করেন যে প্রধানমন্ত্রী

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৬:০০ ১০ মে ২০১৯  

প্রধানমন্ত্রী হলে কী হবে! ছুটির দিনে রোগীদের চিকিৎসা করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। পছন্দ করেন ছুটির দিনে হাসপাতালে রোগীদের সেবা করতে। সময় পেলেই ছুরি-কাঁচি হাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন রোগীর অপারেশনে।

 

 

গেল শনিবারই দেশটির ‘জিগমে দরজি ওয়াংচুক হাসপাতালে এক রোগীর সফল সার্জারি সম্পন্ন করলেন তিনি।

 

প্রায় সাড়ে ৭ লাখ লোকের দেশ ভুটানে গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন লোটে শেরিং।

 

বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, কেউ গলফ খেলে, কেউ তীরন্দাজি করে। কিন্তু আমি মানুষের সেবা করতে পছন্দ করি। আমি আমার ছুটির দিনগুলো এখানে (হাসপাতালে) কাটাই। সার্জারি করি। আমি প্রধানমন্ত্রী হলেও, ডাক্তারি করাটা আমার কাজ। কাজ এতই ভালো লাগার, যে কাজ আমার অবসর সময়ের সঙ্গী।

 

বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষানবিশ ও চিকিৎসকদের পরামর্শ দেন, শনিবার রোগী দেখেন এবং রোববার পরিবারকে সময় দেন শেরিং।

 

চিকিৎসকের পোশাক পরে হাসপাতালে ব্যস্ত সময় পার করেন শেরিং। এছাড়া ওই হাসপাতালে নার্স ও অন্যরা যে যার মত কাজ করে যান। কেউ প্রধানমন্ত্রীকে ভ্রূক্ষেপ করেন না।

 

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হন লোটে শেরিং। এরপর এমবিবিএস পাশ করে জেনারেল সার্জারি নিয়ে শেরিং এফসিপিএস করেছিলেন ঢাকাতেই।

 

ময়মনসিংহ মেডিকেলের পাশাপাশি কিছুদিন হাতে কলমে কাজ করেছেন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজেও।

 

ভুটানের রাজতন্ত্রের সমাপ্তি হয় ২০০৮ সালে। ২০১৮ সালে সাড়ে সাত লাখ মানুষের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হন শেরিং।

 

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। তখন তিনি বলছিলেন, ভালো ডাক্তার হতে হলে আগে ভালো মানুষ হতে হবে। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে তাদের মন জয় করতে হবে। মানবিক হতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করার অনেক সুযোগ আছে ডাক্তারদের। শুধু চিকিৎসা সেবা নয় সামাজিক-রাজনৈতিক অনেক ক্ষেত্রেই ডাক্তারদের অবদান রাখার সুযোগ আছে।

 

লোটে শেরিং তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছি। কিন্তু আমার পেশাকে ছাড়তে পারিনি। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমি চাকরি না করে, বিদেশে না গিয়ে ভুটানের মানুষকে নিয়ে ভেবেছি। তাদেরকে বুঝতে চেষ্টা করেছি। তাদেরকে নিয়ে কাজ করেছি। তাই আজ আমি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।

 

১৯৯১ সালের নভেম্বরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হয়ে এসেছিলেন লোটে শেরিং। এরপর এমবিবিএস পাস করে জেনারেল সার্জারি নিয়ে লোটে শেরিং এফসিপিএস করেছিলেন ঢাকাতেই।

 

ময়মনসিংহ মেডিকেলের পাশাপাশি কিছুদিন হাতে কলমে কাজ করেন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজেও।

 

এরপর ২০০২ সালে দেশে ফিরে কয়েক বছর চাকরির পর রাজনীতিতে যুক্ত হন বন্ধু টান্ডি দর্জির প্রতিষ্ঠিত দলে যোগ দেয়ার মাধ্যমে। দর্জি বর্তমানে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তবে তিনি লোটে শেরিংয়ের মতো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকেই এমবিবিএস করেন।

 

২০১৩ সালের নির্বাচনে তাদের দল হেরে গেলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেশটির ক্ষমতায় যায় তাদের দল প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন লোটে শেরিং।