ঢাকা, ১৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ২৯ কার্তিক ১৪৩২
good-food

মানবতাবিরোধী অপরাধ: হাসিনার মামলার রায় সোমবার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:৪৪ ১৩ নভেম্বর ২০২৫  

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ তিনজনের রায় ঘোষণা হবে ১৭ নভেম্বর।
 
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণার এই দিন ধার্য করে।

ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এ মামলার অপর আসামি হলেন- পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

গত ২৩ অক্টোবর এই মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

সমাপনী দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বক্তব্য দেন। তারা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

এর জবাবে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন তাদের খালাস চেয়ে বক্তব্য দেন। ট্রাইব্যুনাল তাকে বিশেষ সুযোগে বক্তব্য উপস্থাপনের অনুমতি দেয়।

মামলার প্রেক্ষাপট

চলতি বছরের ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউশন এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে। মামলায় মোট ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদের তালিকার বিবরণ রয়েছে ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা জুড়ে।

মামলার বিচারকালে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫৪ জন সাক্ষী দেন। এরপর প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম টানা পাঁচ দিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন, যা গত ১৬ অক্টোবর শেষ হয়।

যুক্তিতর্কে তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে গুম, খুন ও হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেন এবং শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড চান।

একই সঙ্গে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের শাস্তির বিষয়টি তিনি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেন।

অপরদিকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন টানা তিন দিন যুক্তিতর্ক তুলে ধরে ২২ অক্টোবর তার বক্তব্য শেষ করেন।

একই দিনে রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ বক্তব্য দেন। তিনি আদালতকে বলেন, তার মক্কেল সত্য তথ্য দিয়ে আদালতকে সহযোগিতা করেছেন।

জায়েদ বিন আমজাদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় গণভবনে কোর কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকা ২৭ জনের মধ্যে একজন ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।”

তিনি আরও বলেন, “তিনি (মামুন) গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে অবগত ছিলেন। নিজ বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ দমনে আইজিপি হিসেবে তার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা ছিল বলেও স্বীকার করেছেন।”

আইনজীবী বলেন, এ জন্য তার মক্কেল গণঅভ্যুত্থানে আহত, নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করেছেন।